রিমান্ড শুনানিতে নজরুল ইসলাম মজুমদার

‘হাসিনার কথা মত না চললে বড় ভাইয়ের মতো আমাকেও ক্রসফায়ারে মারা হতো’

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:৫৪ অপরাহ্ন, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | আপডেট: ৯:৫২ পূর্বাহ্ন, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেছেন,শেখ হাসিনার পাশে না থাকলে তার বড় ভাইয়ের মতো অবস্থা হতো বলে আদালতকে। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে রিমান্ড শুনানিকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিন তাকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ধানমন্ডি থানার মামলায় পাঁচ দিন ও যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ ও গঠন বৈধ: আপিল বিভাগ

রিমান্ড শুনানিতে ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আন্দোলন যখন চলছিল সব ব্যাংকার এবং ব্যবসায়ীরা একটা মিটিং করেছিল। সেই মিটিংয়ে উনি বক্তব্য রেখেছিলেন। সেই বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন এবং শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন আপনি চালিয়ে যান, আমরা আপনার পাশে আছি। তার এ বক্তব্য সব মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সব জায়গায় তার নিজস্ব লোক নিয়োগ করেছিল। যেমন ফুটবলে নিয়োগ করেছিলেন সালাউদ্দিনকে এবং সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিয়োগ করেছিলেন শ্যামল দত্ত ও সুভাস সিংহ রায়ের মতো লোককে। ব্যবসা এবং ব্যাংকারদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে লোককে হাসিনা নিয়োগ করেছিলেন সেই লোকটা নজরুল ইসলাম মজুমদার।

আরও পড়ুন: ইন্টারনেট বন্ধ রেখে গণহত্যা, জয়ের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ফারুকী বলেন, ব্যাংক থেকে টাকা পয়সা লুটপাট করে নিয়ে শেখ পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য সবকিছু করেছিলেন তিনি। এই মজুমদার তাদের সঙ্গে বসে আন্দোলন দমনে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। সেই হিসাবে সে এ অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। এ আন্দোলনে যারা গুলি চালিয়েছে এবং যাদের নির্দেশে চালানো হয়েছে তা থেকে তারা কোনোভাবেই বাঁচতে পারবে না।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, তিনি এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান। বাংলাদেশের অনেক বড় শিল্প উদ্যোক্তা। তার অধীনে ৫ লাখ লোক কাজ করে। তিনি এখন জেলে। কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলে এসব লোক বেকার হয়ে যাবে। তার বিরুদ্ধে মামলায় কোনো অভিযোগ নেই। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য না। সে একজন ব্যবসায়ী মানুষ। সরকার আসে, সরকার যায়। তারা ব্যবসায়ীরা তাদের সুবিধার জন্য যা করা দরকার করে। জেলহাজতে থাকাকালীন তার হার্টে রিং পরানো হয়েছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে। তাকে একাধিক মামলায় আগে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো কিছু পায় নাই। তার শারীরিক যে অবস্থা রিমান্ডে নেওয়ার মতো কোনো সুযোগ নেই। রিমান্ড বাতিল করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হোক।

এরপর নজরুল ইসলাম নিজে কিছু বলতে আদালতের অনুমতি চান। এরপর তিনি বলেন, আমি হার্টের রোগী। অনেক কষ্ট হচ্ছে। ওই সময় শেখ হাসিনার পাশে না থাকলে আমার বড় ভাই পাঁচ বছর এমপি ছিল, সেই বড় ভাইকে ক্রসফায়ারে মারা হয়েছে। আমারও সেই অবস্থা হতো। আমার রিমান্ড বাতিল করে আমাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ।

এরপর আদালত তার রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এজলাস থেকে হাজতখানায় যাওয়ার পথে মজুমদারের হাতে চিকিৎসার কাগজপত্র সম্বলিত একটি ফাইল দেখা যায়।