আজও তাপমাত্রা রেকর্ড ৩৮.৭ ডিগ্রি

চুয়াডাঙ্গায় গরমের তীব্রতায় বাড়ছে রোগীর চাপ

Sanchoy Biswas
সনজিত কর্মকার, চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ১০:১৬ অপরাহ্ন, ১৩ মে ২০২৫ | আপডেট: ৮:৫৪ অপরাহ্ন, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গার জনজীবন। জেলার উপর দিয়ে বইছে মৃদু, মাঝারি থেকে তীব্র ও অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। এতে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায়। এদের মধ্যে বেশি অসুস্থ হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। এই গরমে তাদের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি জ্বর-ঠান্ডা তীব্রতা বেশি হলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে বলেছেন তাঁরা।

মঙ্গলবার বিকেল ৩ টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪৩ শতাংশ। এর আগের দিন সোমবার একই সময়ে তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রবিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এছাড়া শনিবার এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় এ জেলায়।

আরও পড়ুন: রূপগঞ্জে শতাধিক গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও সমিতির প্রতারকরা, দিশেহারা গ্রাহকরা

প্রখর রোদ আর ভ্যাপসা গরমে ওষ্ঠাগত মানুষসহ প্রাণিকুল। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে বাইরে বের হলেও বিপাকে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। 

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, চলমান তাপপ্রবাহ সপ্তাহজুড়ে মাঝারি থেকে অতি তীব্র অবস্থায় রয়েছে। তবে দু’এক দিনের মধ্যে বৃষ্টির দেখা মিলবে।

আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় পুরাতন ভবনের ছাদ ধসে ৩ শ্রমিক নিহত, আহত ২

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ৪ দিনে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে আড়াইশোর বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। মেডিসিন ওয়ার্ডে স্ট্রোক ও গরমজনিত অসুস্থতায় ভর্তি হয়েছেন প্রায় ২০০ জন। শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৩ শ মতো শিশু, যাদের বেশিরভাগই গরমজনিত রোগে আক্রান্ত।

বহির্বিভাগেও দেখা গেছে দীর্ঘ লাইন। রোগীদের মধ্যে অনেকেই ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি, মাথা ঘোরা বা পানিশূন্যতায় ভুগছেন। অনেকে ভর্তি না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আসমানখালী গ্রাম থেকে আসা অভিভাবক মিরাজুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড গরম পড়ছে। বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়ায় সদর হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। চিকিৎসকের পরামর্শে ভর্তি রেখেছি। এখানেও প্রচণ্ড গরম।

সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহানাজ বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। ওয়ার্ডে সবসময়ই ৫০ জনের বেশি রোগী থাকে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, তীব্র গরমে পানির চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু দূষিত পানি ও খাবার গ্রহণের কারণে বেড়েছে ডায়রিয়া, জ্বর-ঠান্ডা। হাসপাতালের সব বেডে রোগী। ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে আড়াইশো শয্যার হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিতে হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৪০০ রোগী ভর্তি থাকেন। জনবল ও সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এই গরমে অতিরিক্ত মসলা জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো।