পটুয়াখালীতে চাঞ্চল্যকর আলমগীর তালুকদার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ৪

Sanchoy Biswas
অপূর্ব সরকার, পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৫:১৪ অপরাহ্ন, ৩০ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ৩:১২ পূর্বাহ্ন, ১৬ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

পটুয়াখালী সদর উপজেলার বড় আউলিয়াপুর ইউনিয়নে নিজ বাড়ি থেকে অর্ধগলিত ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের দুই মাস পর অবশেষে নৃশংসভাবে খুন হওয়া আলমগীর তালুকদার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ও ধারাবাহিক গোয়েন্দা তৎপরতায় রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে মূল অভিযুক্তসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন মোঃ শাহিন সিকদার (৪৩), মোঃ জাফর জোমাদ্দার (৬১), মোঃ রুহুল আমীন খান (৪৮) ও মোঃ রিপন মিয়া ওরফে রিপন শরীফ (৪২)। তারা সবাই পটুয়াখালী জেলার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে প্রধান আসামি শাহিন সিকদারকে গত ২৭ জুলাই ঢাকা মহানগরীর মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অন্য তিনজনকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন: যৌথ বাহিনীর অভিযানে সারাদেশে আটক ৭০

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ই এপ্রিল রাতে স্ত্রী আমেনা বেগমের সঙ্গে শেষবার কথা বলার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন আলমগীর তালুকদার (৫৫)। ১২ এপ্রিল সকালে স্ত্রী ও ছেলে তার বাড়িতে গিয়ে দরজা তালাবদ্ধ এবং ভেতর থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে দরজা ভেঙে দেখতে পান, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ও মুখ গামছা দিয়ে মোড়ানো মরদেহ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছে।

ঐদিন সদর থানায় হত্যা মামলা রুজু করেন ভিকটিমের স্ত্রী আমেনা বেগম। পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই আলামত সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে জেলা পুলিশের একাধিক টিম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. সাজেদুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডের পেছনের মূল কারণ ও জড়িতদের শনাক্তে মাঠে নামে।

আরও পড়ুন: পাপিয়া দম্পতির সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড, ৫ লাখ টাকা জরিমানা

জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা প্রতারণামূলক ম্যাগনেটিক পিলার ও পাওয়ার কয়েন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। ওই অবৈধ ব্যবসায় লাভের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে আলমগীর তালুকদারকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের রাতে আসামিরা তার বাড়িতে গিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে রশি ও গামছা দিয়ে বেঁধে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে এবং পরে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়।

আসামি শাহিন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তার তথ্য অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত রশি, গামছা ও বালিশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. সাজেদুল ইসলাম সজল বলেন, "ঘটনার শুরু থেকেই পুলিশ পেশাদারিত্বের সঙ্গে তদন্ত করেছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেফতারে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। আরও কেউ জড়িত থাকলে আইনের আওতায় আনা হবে।"

পুলিশের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, অপরাধীরা যতই শক্তিশালী হোক, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।