ছাত্রসংসদ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (জকসু) নীতিমালা অনুমোদন ও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ এবং সম্পূরক বৃত্তি প্রদানের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বেলা ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
আরও পড়ুন: চবিতে প্রক্টর অফিসেই ভুক্তভোগীকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে অভিযুক্ত মাহফুজ শুভ্র পক্ষের মব সৃষ্টি
কর্মসূচি পালনকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা 'জকসু আমার অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার', 'জকসু দিতে কিসের ভয়, চেয়ার যাওয়ার শঙ্কা হয়?', 'বৃত্তি আমার অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার', 'আটটা টু আটটা, বাজায় কার ঘণ্টা', ‘ভিসি স্যার জানেন না নাকি, আমরা এখানে বসে গেছি’, ‘হচ্ছে হবে বাদ দাও, কবে হবে বলে দাও’, ‘করছি করছি বাদ দাও, কবে হবে বলে দাও’, ‘বিপ্লবে বলীয়ান, নির্ভীক জবিয়ান’সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। প্রশাসন শুধু আশ্বাস দিয়েছে, বাস্তব পদক্ষেপ নেয়নি। এবার আমরা ন্যায্য অধিকার আদায় না করে ফিরব না।”
আরও পড়ুন: ডাকসুতে তন্বীর সম্মানে গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদটি খালি থাকবে: ছাত্রদল
জবি শাখা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ও ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য মাসুদ রানা বলেন, 'আজ দ্বিতীয় দিনের মতো আমরা জকসু ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। বছরের পর বছর প্রশাসনের টালবাহানা আর মন্ত্রণালয়ে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য দেখেছি। আমাদের স্পষ্ট বার্তা হলো শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এরকম টালবাহানা করে কোনো প্রশাসন টিকে থাকতে পারবে না। জবিয়ানরা অধিকার আদায়ে পিছু হটবে না।'
শাখা বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) আহ্বায়ক মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই প্রহসন গত ১ বছর ধরে চলছে। যমুনা আন্দোলনের পরও আমাদের সম্পূরক বৃত্তি প্রদান শুরু হয়নি। ডাকসু, রাকসু ও জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে, কিন্তু জকসুর এখনও নীতিমালাও করা হয়নি। এ নীতিমালা অনুমোদন করতে প্রশাসন বরাবরই গড়িমসি করে এসেছে। আমাদের ন্যায্য অধিকার যদি প্রশাসন না দেয় তবে আমরা এমন প্রশাসনের গদি ছাড়া করতেও পিছপা হবো না।'
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল আউয়াল বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছে। জগন্নাথকে বেগম খালেদা জিয়া বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করায় ফ্যাসিবাদের আমলে শুধুমাত্র প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো রকম উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি। জকসু হবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের মাধ্যম। তাই অতি দ্রুত দুই দফা দাবি মেনে নেওয়া হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যার শেষ নেই। আমরা এর আগে ৩-৪ বার কর্মসূচি পালন করেছি। যমুনায় কর্মসূচিতে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে বলে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আমরা জানতে চাই ঠিক কী কারণে জকসু হচ্ছে না। ঠিক কী কারণে আমরা আমাদের প্রাপ্য পাচ্ছি না। যদি প্রশাসন রবিবারের মধ্যে সিন্ডিকেট ডেকে পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।'
এর আগে, গত মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) থেকে জকসুর নীতিমালা অনুমোদন ও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ এবং সম্পূরক বৃত্তি প্রদানের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, কর্মসূচি শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা জানান, আগামী রবিবার দুপুর ১২টার মধ্যে সম্পূরক বৃত্তি নিয়ে প্রশাসন থেকে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না আসলে এবং বিশেষ সিন্ডিকেট বসিয়ে জকসু নীতিমালা অনুমোদন না করা হলে ভিসি ভবনের ঘেরাও করে "ব্রেক দ্য সাইলেন্স" কর্মসূচি পালন করা হবে।