সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী ঘাঁটিতে হামলায় ৬ বাংলাদেশি নিহত, যুদ্ধাপরাধের সতর্কবার্তা গুতেরেসের

Any Akter
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪২ অপরাহ্ন, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১২:৪২ অপরাহ্ন, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

সুদানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটিতে ভয়াবহ ড্রোন হামলায় ৬ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ওপর এ ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

রোববার (তারিখ অনুযায়ী) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় গুতেরেস বলেন, “সুদানের কাদুগ্লিতে জাতিসংঘের ঘাঁটিতে চালানো ভয়াবহ ড্রোন হামলায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় আমি গভীরভাবে মর্মাহত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর ওপর হামলা সম্পূর্ণ অন্যায্য এবং এটি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।”

আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ার বন্ডি সমুদ্র সৈকতে বন্দুক হামলা, নিহত অন্তত ১০

তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ কর্মী ও বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা। এ ঘটনায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

গুতেরেস নিহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

আরও পড়ুন: সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা নিহত, কঠোর প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বিবৃতিতে হামলাটিকে “বৈশ্বিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

শনিবার সুদানের আবেই জেলার কাদুগ্লিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর বাংলাদেশি কন্টিনজেন্টের ঘাঁটিতে চালানো ড্রোন হামলায় নিহত হন ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী। তারা হলেন— কর্পোরাল মো. মাসুদ রানা, সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম, সৈনিক শামীম রেজা, সৈনিক শান্ত মণ্ডল, মেস ওয়েটার জাহাঙ্গীর আলম এবং লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া।

সুদানের সেনাবাহিনী ও সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ হামলার জন্য দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)-কে দায়ী করা হয়েছে। সুদানের সেনাপ্রধান ও সরকারপ্রধান জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এই হামলাকে “বিপজ্জনক উত্তেজনা বৃদ্ধি” বলে মন্তব্য করেছেন।

তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় আরএসএফ কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদানে ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের জেরে দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে ভয়াবহ সংঘাত শুরু হয়। প্রায় আড়াই বছর ধরে চলমান এই গৃহযুদ্ধে রাজধানী খার্তুম ও দারফুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ ও উদ্যোগ সত্ত্বেও এই সংঘাত বন্ধের কোনো তাৎক্ষণিক ইঙ্গিত এখনো দেখা যাচ্ছে না।