পদ্মার ভাঙনের আতঙ্ক, হুমকির মুখে লৌহজংয়ের মানচিত্র

মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পদ্মার পাড় ঘেঁষা গ্রামগুলোতে আবারও ভাঙনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে বাস্তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের ভাঙনের ঘটনা ঘটেনি। নদীর পাড়ে বসবাসরত মানুষজন প্রতিনিয়ত আতঙ্ক থাকে এই বুঝি সর্বনাশা পদ্মা আবার আঘাত হানে লৌহজংয়ের মানচিত্রে। প্রতিবছর কোন কোন জায়গায় ভাঙ্গনের কারণে ছোট থেকে ছোট হচ্ছে লৌহজংয়ের মানচিত্র।
বেজগাঁও ইউনিয়নের সুন্দিসার গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আলমগীর শেখ বলেন পদ্মা নদী তীর ঘেঁষা উপজেলার, মেদিনীমণ্ডল কনকসার , লৌহজং - তেউটিয়া, বেজগাঁও গাঁওদিয়া , খিদিরপাড়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ প্রতি বর্ষা মৌসুমেই দুশ্চিন্তায় থাকেন। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ভাঙনের শঙ্কা দেখা দিলেও বর্তমানে কোথাও ভাঙনের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: সিএনজি পাম্পে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, পুড়লো ১০ সিএনজি ও বাস
লৌহজং - তেউটিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সজিব বেপারী বলেন উত্তাল পদ্মা নদী তীরবর্তী এলাকায় তীব্র স্রোতের ভয়ে ভাঙন আতংক বিরাজ করছে জনজীবনে। দ্রুত স্হায়ী বেড়িবাঁধ বাস্তবায়নের প্রতীক্ষায় লৌহজং-টংগিবাড়ী উপজেলার জনগণ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবার পদ্মার স্রোত তুলনামূলক কম। ইতোমধ্যে যেসব স্থানে জিওব্যাগ ফেলা হয়েছিল, সেগুলোও এখন কার্যকর রয়েছে। ফলে নদীর তীব্র স্রোতেও ভাঙন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। তবে পদ্মা নদীর চরিত্র অস্থির হওয়ায় যে কোনো সময় ভাঙন শুরু হতে পারে—এমন শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: শার্শার সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে পাচারকারীসহ আটক ৮
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নেছার উদ্দিন জানান, “আমরা প্রতিদিন পদ্মা নদীর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। কোথাও নতুন ভাঙনের খবর পাওয়া যায়নি। তবে মানুষকে সচেতন রাখা হচ্ছে।”
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেন, “প্রতিবার ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। এবার আপাতত ভাঙন না থাকলেও আতঙ্ক আছে। নদীর পাড়ের মানুষ রাতদিন ভয়ে দিন কাটাচ্ছে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। সাময়িক জিওব্যাগ ফেলে সমাধান করা গেলেও দীর্ঘমেয়াদে এভাবে নদী নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। লৌহজংয়ে পদ্মার ভাঙনের আতঙ্ক এখনো ঘরে ঘরে বিরাজ করছে। যদিও বর্তমানে ভাঙন নেই, তবুও অস্থির পদ্মার চরিত্রের কারণে মানুষ শঙ্কিত ভবিষ্যৎ নিয়ে।