ডিমের দামে রেকর্ড, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য দুর্ভোগ

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন, ২৪ জুন ২০২৪ | আপডেট: ৬:০৩ পূর্বাহ্ন, ২৪ জুন ২০২৪
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে ডিমের দাম , যার ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ এই খাদ্যটি ক্রয় করা কঠিন হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীর বাজারে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম ১৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  একদিকে ডিমের দাম বাড়ছে, অন্যদিকে এর ওজনও কমছে।  পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়, যা মাত্র কয়েক দিন আগেও ছিল ১৫০ টাকা। কিছুদিন আগেও একটি ডিমের দাম ছিল ১২ টাকা; এখন তা ক্রয় করতে লাগছে ১৪-১৫ টাকা।

সোমবার (২৪ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি হালি ডিমের দাম ৫ টাকা বেড়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড়বাজার থেকে কিনলে ডিমের ডজন ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা, আর খুচরা দোকানে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ডিএসইতে বড় দরপতন: ১৩ কার্যদিবসে সর্বনিম্ন লেনদেন

বাজারে আসা একজন সাধারণ ক্রেতা বলেন, বাজারের সবকিছুর দাম এখন বেশি। ডিমের হালি যদি ৬০ টাকা হয় তাহলে আমরা কি খাব। সবজির দামও বেশি রাখছে বিক্রেতারা। আমরা সাধারণ ক্রেতারা অসহায়।

রাজধানীর ডিম ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, উৎপাদন খরচ নির্ধারণ না হওয়ায় ডিমের বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো ধারণা করা যাচ্ছে না। খামারিরা বলছেন, মুরগির খাদ্য ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিমের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো হাত নেই।

আরও পড়ুন: ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর আইনগত ভিত্তি নেই: বাণিজ্য উপদেষ্টা

পাইকারি ডিম বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ডিমের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া এপ্রিল-মে মাসে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামারিরা। অতি গরমে অনেকের খামারে মুরগি মারাও গেছে। যার প্রভাব পড়েছে ডিমের বাজারে।

প্রান্তিক খামারিরা বলছেন, ডিমের করপোরেট ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের পুরোনো চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠায় বাজারে এ অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) দাবি করেছে, সারাদেশে হঠাৎ করেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডিমের বাজার অস্থির হয়ে যায়। এর নেপথ্যে রয়েছে রাজধানীর তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির কারসাজি। কারণ, তারাই সারাদেশের ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে।

বিপিএ সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, ‘ডিম ব্যবসায়ী সমিতি এবং করপোরেট কোম্পানিগুলোর কারসাজিতে হুটহাট বাজার অস্থির হয়ে ওঠে। ক্ষুদ্র খামারিরা যখন ডিম উৎপাদন করেন, তখন করপোরেট প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক চক্র দাম কমিয়ে রাখে। এ অবস্থায় প্রান্তিক খামারিরা উৎপাদনে টিকে থাকতে পারেন না। তখন ক্ষুদ্র খামারিরা উৎপাদন কমিয়ে দিলে এ অসাধু চক্র ইচ্ছামতো দাম বাড়ায়। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে নিঃস্ব হচ্ছেন প্রান্তিক খামারিরা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশে গত ১০ অর্থবছরে ডিম ও দুধ উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। এ সময়ে মাংস উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণের কাছাকাছি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে ডিমের উৎপাদন ছিল ১ হাজার ১৭ কোটি, যা এখন বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৩৩৮ কোটি। তবে বাজারের অস্থিতিশীলতার কারণে উৎপাদন বাড়ার সুফল পাচ্ছেন না সাধারণ ভোক্তারা।