ইউরোপে আরও এক দেশে জনসমক্ষে নিকাব-বোরকা নিষিদ্ধ
ইউরোপের আরও একটি দেশ জনসমক্ষে নিকাব ও বোরকা পরা নিষিদ্ধের পথে হাঁটছে। দেশটি হলো পর্তুগাল। ‘ধর্মীয় বা লিঙ্গভিত্তিক উদ্দেশ্যে মুখ ঢেকে রাখা পোশাক নিষিদ্ধকরণ’ সংক্রান্ত একটি বিল দেশটির পার্লামেন্টে পাস হয়েছে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত সংসদীয় অধিবেশনে বিলটি পাস হয় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা। বিলটি উত্থাপন করে পর্তুগালের অতি ডানপন্থি রাজনৈতিক দল চেগা পার্টি।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জনসমক্ষে বা উন্মুক্ত স্থানে নিকাব বা বোরকা পরলে ২০০ থেকে ৪ হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। আর কাউকে জোর করে নিকাব পরতে বাধ্য করলে সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তবে ব্যতিক্রম হিসেবে উড়োজাহাজ, কূটনৈতিক এলাকা ও উপাসনালয়ে নিকাব পরার অনুমতি থাকবে।
আরও পড়ুন: 'ফিফা শান্তি পুরস্কার’ পেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
বিলটি এখনই কার্যকর হচ্ছে না। এটি প্রথমে যাবে সাংবিধানিক বিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে, যেখানে পর্যালোচনা শেষে পাঠানো হবে প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো ডি সুজা’র কাছে। তিনি চাইলে বিলটিতে স্বাক্ষর করবেন, অথবা সাংবিধানিক আদালতে পুনর্বিবেচনার জন্য পাঠাতে পারেন।
আইনে রূপ নিলে পর্তুগাল ইউরোপের সেই দেশগুলোর তালিকায় যোগ দেবে, যেখানে জনসমক্ষে নিকাব বা বোরকা আংশিক বা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এর আগে ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডস এমন আইন কার্যকর করেছে। বিলের প্রস্তাবক চেগা পার্টির নেতা আন্দ্রে ভেনচুরা একে ‘নারীর স্বাধীনতা ও ইউরোপীয় মূল্যবোধ রক্ষার ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেন। তার ভাষায়, আজ আমরা আমাদের মেয়েদের বোরকা থেকে রক্ষা করেছি।
আরও পড়ুন: ডনবাস ইস্যুতে কোনো ছাড় নয়, কঠোর অবস্থানে পুতিন
অন্যদিকে বামপন্থি নারী আইনপ্রণেতারা বিলটির কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, এটি ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং মুসলিম নারীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত। ক্ষমতাসীন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির এমপি আন্দ্রেয়া নেটো বলেন, এটি নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করার বিষয়। কোনো নারীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মুখ ঢেকে রাখতে বাধ্য করা উচিত নয়।”
বিলটি নিয়ে ইতোমধ্যে মানবাধিকার সংগঠন ও মুসলিম কমিউনিটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের আশঙ্কা, এই সিদ্ধান্ত ধর্মীয় সহনশীলতার দেশ হিসেবে পর্তুগালের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে।
এদিকে ১০টি দলের মধ্যে ২টি দল—People–Animals–Nature Party ও Together for the People Party ভোটদানে বিরত থাকে। তাদের মতে, এই বিল বৈষম্য উসকে দেবে এবং সমাজে বিভাজন বাড়াবে।





