নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে সীমান্তের বাংলাদেশিরা
মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর (বিজিপি) সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) লড়াই চলছে। মিয়ানমার সীমান্তের ক্যাম্প দখলে টানা গুলিবর্ষণ, মর্টার শেল নিক্ষেপসহ বিস্ফোরণের শব্দে সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের গ্রামগুলো কেঁপে উঠছে। সে দেশে চলমান সংঘাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু-জলপাইতলী সীমান্তজুড়েই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আতঙ্কে সীমান্তবর্তী তুমব্রু বাজারপাড়া, কোনাপাড়া, মাঝেরপাড়া, ঘুমধুমপাড়া, জলপাইতলী গ্রামের কয়েক শতাধিক মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রসহ দূর-দূরান্তের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
বুধবার সকাল পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ২৮ পরিবারের ১১৮ সদস্য। অপরদিকে আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে চলে গেছে দেড় শতাধিকের মতো পরিবার। তবে ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো কেউ আশ্রয় নেয়নি।
আরও পড়ুন: জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ, উচ্চপদস্থ তদন্ত বোর্ড গঠন
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, বুধবার মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে তেমন গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। শুনেছি আরাকান বিদ্রোহীরা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের তুমব্রু, ঘুমধুম, ডেকুবুনিয়া ৩টি ক্যাম্পই দখল করে নিয়েছে।
এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তবাসীদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা ২টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজনদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে গ্রাম প্রহরী ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে। আশ্রয়কেন্দ্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও খাবার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সংস্কার করে কালক্ষেপণ করলে ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনবে: রুহুল কবির রিজভী
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নিতে খোলা হয়েছে অস্থায়ী ২টি আশ্রয়কেন্দ্র। সীমান্তবর্তী অতিঝুঁকিপূর্ণ আড়াইশ পরিবারের মধ্যে দেড়শ পরিবার ইতোমধ্যে আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে চলে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে ২৮ পরিবার। অন্যদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকারীদের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
