আওয়ামী লীগ আমলে ব্যাংক খাতে ব্যাপক লুটপাট ও অর্থপাচার: অর্থ উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঋণের নামে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এসব টাকার বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে এবং আদায় না হওয়ায় তা এখন খেলাপি ঋণে পরিণত হচ্ছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সরকারের এক বছর পূর্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।
ড. সালেহউদ্দিন জানান, নতুন করে আরও ১০১ জন অর্থপাচারকারী শনাক্ত হয়েছে, যাদের প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকা করে বিদেশে পাচার করেছে। এর আগে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত ১১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছিল এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়াও চলছে।
আরও পড়ুন: অসহায় পরিবারের দুই শিশুকে চিকিৎসা সহায়তা ও অটোরিকশা দিলেন তারেক রহমান
তিনি বলেন, শুধুমাত্র একটি ব্যাংকের মোট ঋণের ৯৫ শতাংশ খেলাপি। ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও তার ঘনিষ্ঠরা সব টাকা নিয়ে চলে গেছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত এক বছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সব সূচক নেগেটিভ ছিল, এখন তা পজিটিভ হয়েছে। সুশাসনের ঘাটতি, অর্থপাচার ও দুর্নীতির কারণে ব্যাংক খাত সংকটে পড়েছিল, সেখান থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। জুনে তা ৬ শতাংশে নামার আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে তা ৮ শতাংশের বেশি, যা জুলাইয়ে ছিল ১৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: তিন দিনের সফর শেষে কুয়ালালামপুর থেকে দেশে ফিরছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনূস
অর্থ উপদেষ্টা জানান, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য ১১টি বড় মামলা হয়েছে এবং ১২টি দেশের সঙ্গে মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএলএ) করতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আইনজীবীর মাধ্যমে অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ব্যাংক খাত সংস্কার কার্যক্রম উল্টে দেয়, তাহলে আমানতকারীরা আস্থা হারাবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন আগামী নির্বাচিত সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ হবে।