স্বেচ্ছায় অবসরে যাচ্ছেন ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর

স্বেচ্ছায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন ‘ছাগলকাণ্ডে’ আলোচিত সেই মতিউর রহমান।
বুধবার (৩১ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (শুল্ক-১ শাখা) থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব মকিমা বেগম প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে বিদায় নেবো: ধর্ম উপদেষ্টা
প্রজ্ঞাপনে বলা হইয়েছে, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ-এ সংযুক্ত মো. মতিউর রহমানের চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তার আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা-৪৪(১) ও ধারা-৫১ অনুযায়ী আগামী ২৯ আগস্ট ২০২৪ তারিখে তাকে সরকারি চাকরি হতে অবসর (ঐচ্ছিক) প্রদান করা হলো। এ সময়ে তিনি অবসরজনিত আর্থিক সুবিধা- অবসর উত্তর ছুটি, লাম্পগ্র্যান্ট এবং পেনশন পাবেন না।
প্রসঙ্গত, এনবিআর কর্মকর্তা মতিউরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দুর্নীতির অভিযোগ পায় দুদক। কিন্তু প্রতিবারই বিভিন্ন কৌশল আর প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির দায় এড়িয়ে যেতে সক্ষম হন তিনি।
আরও পড়ুন: বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকাশ করা হয়নি উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদের হিসাব
মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম দুদকে অভিযোগ আসে ২০০৪ সালে। সে সময় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচারের। অভিযোগ আছে, হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা টাকা মতিউর তার প্রবাসী কোনো এক আত্মীয়র মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে তা রেমিট্যান্স বাবদ দেখিয়ে দিয়েছিলেন ট্যাক্স ফাইলে।
এরপর ২০০৮ সালে আবারও দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে তার বিরুদ্ধে। এবার অভিযোগ বিলাসবহুল পণ্যের শুল্ক মাফ করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন। কিন্তু তদন্ত শুরু হতে না হতেই প্রভাবশালীদের চাপে তা ধামাচাপা পড়ে যায়, আবারও বেঁচে যান মতিউর। ২০১৩ ও ২০২১ সালে আরও দুবার দুদকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু সেবারও কৌশলী মতিউর অবৈধ সম্পদকে পারিবারিক ব্যবসা ও ঋণ দেখিয়ে প্রস্তুত করেন ট্যাক্স ফাইল।
সবশেষ এবারের কোরবানি ঈদ উপলক্ষে সাদিক এগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকার এক ছাগল কিনে আলোচনায় চলে আসে তার ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত। সঙ্গে আবারও সামনে এসে পড়ে মতিউরের নাম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মূল ধারার মিডিয়ার কল্যাণে এ দফায় বেশ ভালোভাবে ফেঁসে যান এনবিআরের আলোচিত এ কর্মকর্তা। চাকরি হারানোর পাশাপাশি পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে মাঝে গা ঢাকা দেন তিনি। সেইসঙ্গে পঞ্চমবারের মতো তদন্তে নেমে আগের চারবারের প্রতিটি অভিযোগের বিষয়ে পর্যালোচনার আশ্বাস দেয় দুদকও। শুধু তাই নয়, যে বা যাদের মাধ্যমে বারবার দায়মুক্তি পেয়েছে মতিউর, তা-ও খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায় সংস্থাটি।