মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ সরিয়ে নেওয়া উচিত: বিআইপি

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৩ পূর্বাহ্ন, ২৬ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, ২৬ জুলাই ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কারিগরিভাবে বৈধ হলেও এটি কার্যত একটি অনিরাপদ এলাকায় গড়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনাবিদরা। কারণ, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এরিয়ার মধ্যে পড়েছে। যেখানে বিমান ওঠানামার সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর বাংলামটরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়।

‘মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা : জননিরাপত্তা এবং উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের দায় ও করণীয়’ শীর্ষক ওই সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ তামজিদুল ইসলাম।

আরও পড়ুন: বিমান বাহিনীর আন্তঃঘাঁটি কাবাডি প্রতিযোগিতা সমাপ্ত, চ্যাম্পিয়ন কক্সবাজার ঘাঁটি দল

প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিমানবন্দরের রানওয়ের পরবর্তী ৫০০ ফুট এলাকায় কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা নিষিদ্ধ। তবে এরপরের প্রায় ১৩,000 ফুট বা প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকা অ্যাপ্রোচ এরিয়া হিসেবে চিহ্নিত, যেখানে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করে।

পরিকল্পনাবিদরা বলেন, কারিগরি দিক থেকে অ্যাপ্রোচ এরিয়ায় ১৫০ ফুট উচ্চতার স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও, জনসমাগম হয় এমন স্থাপনার অনুমতি না থাকা উচিত। বর্তমান নিয়মে কী ধরনের স্থাপনা সেখানে থাকবে সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা নেই, যা বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে।

আরও পড়ুন: আল বদর বাহিনী ধর্মকে বিক্রি করছে, বিএনপি বিশৃঙ্খলাকে প্রশ্রয় দেয় না: আমিনুল হক

পরিকল্পনাবিদ তামজিদুল ইসলাম জানান, রাজউকের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপে উচ্চতা নিয়ন্ত্রণের কথা থাকলেও ভূমির ব্যবহারের ধরন সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। সেখানে স্কুল-কলেজ, মসজিদ বা জনজমায়েত সৃষ্টি করে এমন স্থাপনা হলে জননিরাপত্তার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।

বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, “বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ এরিয়া থেকে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদের মতো স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া এখন সময়ের দাবি। না হলে ভবিষ্যতে আরেকটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটলে সেটি ঠেকানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।”

তিনি আরও বলেন, “বিমানবন্দর একসময় ঢাকা শহরের বাইরে ছিল, কিন্তু শহর বিস্তৃত হওয়ার পর উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণের ন্যূনতম বিধান মানা হয়নি। যার ফলে এই বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।”

এ সময় উপস্থিত অন্যান্য পরিকল্পনাবিদরাও বলেন, স্থাপনার উচ্চতা কিংবা ব্যবহার—উভয় দিকেই নীতিগত ব্যত্যয় ঘটছে, যা সংশোধন না হলে জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তা উভয়ই হুমকির মুখে পড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বিআইপির সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান। উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি শাহরিয়ার আমিন, কোষাধ্যক্ষ ড. মোসলেহ উদ্দীন হাসান, বোর্ড সদস্য আবু নাঈম সোহাগসহ অন্যান্য সদস্যরা।