বিএনপি প্রার্থীরা তারেক রহমানের ছবি ব্যবহার করলে কী করবে ইসি, প্রশ্ন এনসিপির
নিবন্ধন পাওয়ার পর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে প্রথম সংলাপে নির্বাচনি আচরণবিধি প্রয়োগের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিবন্ধিত সাতটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপে অংশ নেয় এনসিপি। উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা এবং যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা।
আরও পড়ুন: তফসিল ও ভোটের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান ইসির
সংলাপে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জহিরুল ইসলাম বলেন, “বিএনপির বর্তমান প্রধান হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। সে ক্ষেত্রে যদি বিএনপির কোনো প্রার্থী তারেক রহমানের ছবি ব্যবহার করে, কমিশনকে এই বিধিমালা প্রয়োগ করতে হবে। তখন কমিশনের সক্ষমতাটা দেখা যাবে।”
আইন অনুযায়ী, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রণীত নির্বাচনি আচরণবিধির ৭ ধারার চ উপধারায় বলা হয়েছে, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী কেবল তার বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি ব্যানার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ও ফেস্টুনে ব্যবহার করতে পারবেন। কোনো পোস্টার অনুমোদিত নয়।
আরও পড়ুন: চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করলেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হবে খালেদা জিয়াকে: মির্জা ফখরুল
এনসিপি অভিযোগ করেছে, নতুন আচরণবিধি বাংলাদেশের নির্বাচনী সংস্কৃতি ও উৎসবমুখর পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। জহিরুল ইসলাম বলেন, “বিধিমালায় বলা হয়েছে কাপড় বা চটের ওপর ব্যানার করতে হবে। দেশে চটের ওপর প্রিন্ট দেওয়ার প্রতিষ্ঠান কম, প্রত্যন্ত এলাকায় তো আরও সীমিত।”
তিনি আরও বলেন, সাউন্ডবক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শব্দসীমা ৬০ ডেসিবেল নির্ধারণ করা হয়েছে, কিন্তু শব্দ পরিমাপের দায়িত্ব, যন্ত্র এবং অভিযোগ দায়েরের প্রক্রিয়া স্পষ্ট নয়। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, আচরণবিধিতে তদন্ত কমিটির সংজ্ঞা স্পষ্ট না হওয়ায় প্রক্রিয়া জটিল হতে পারে।
জহিরুল ইসলামের দাবি, এই আচরণবিধি কাঠামোগতভাবে কিছু প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দিচ্ছে। তবে আচরণবিধির ২৪ ও ২৫ ধারা এনসিপি স্বাগত জানিয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনী ইশতেহার পাঠ ও আচরণবিধি মানার ঘোষণা দেওয়া হয় এবং টেলিভিশনে নির্বাচনী সংলাপে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকে।
এনসিপি নির্বাচনী সহিংসতা রোধের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে, কোনো দলের অভ্যন্তরীণ সহিংসতায় নিহত বা আহত হলে সেই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করা হোক।
সংলাপে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানতে চান আসন্ন গণভোটের নীতিমালা কবে পাওয়া যাবে। তিনি নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “কমিশন যদি সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থাকে এবং কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাত না করে, তাহলে এনসিপি শতভাগ সহযোগিতা করবে।”
তিনি জোটের প্রার্থী নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে—গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের এই সংশোধনকে সাধুবাদ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে সিদ্ধান্তে অনড় থাকার আহ্বান জানান।





