কানাডায় দুর্বৃত্তের হামলায় বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী নিহত

কানাডার অন্টারিও প্রদেশের ওয়েন সাউন্ড শহরে দুর্বৃত্তের হামলায় বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী শরীফ রহমান (৪৪) নিহত হয়েছেন। তিনি কারি হাউস নামের একটি রেস্তোরাঁর মালিক ছিলেন।
শরীফ রহমান ১৭ আগস্ট রাতে রেস্তোরাঁ বন্ধ করার জন্য শেষ সময়ের কাজ করছিলেন স্টাফদের সঙ্গে। তখন তিনজন লোক খাবারের বিল না দিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। শরীফ বাইরে গিয়ে তাঁদের থামাতে চেষ্টা করেন, তখন ওই তিনজন তাঁর ওপর হামলা করেন। হামলার পরপর মারাত্মকভাবে আহত শরীফকে অন্টারিও প্রদেশের লন্ডন শহরের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ২৪ আগস্ট গভীর রাতে চিকিৎসকেরা শরীফকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ায় মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা চালু
হামলার সময় শরীফের ভাগনে সেখানে ছিলেন। তিনি এ ঘটনায় সামান্য আহত হন। পুলিশ এখন পর্যন্ত হামলাকারী তিনজনের কাউকে আটক করতে পারেনি। তবে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে থাকা গাড়িটির ছবি প্রকাশ করেছে। জানা গেছে, শরীফ রহমান বাংলাদেশের সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। এরপর তিনি কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে এমফিল করেন। তাঁর স্ত্রী শায়লাও সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের সাত বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। পড়াশোনা শেষে শরীফ রহমানের কানাডায় ইমিগ্রেশন নিয়ে চলে আসেন। ২০১৫ সালে কারি হাউস নামে রেস্তোরাঁর ব্যবসা শুরু করেন।
ওয়েন সাউন্ড শহরটি একটি ছোট শহর। মাত্র ২৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই শহরে ৩৩ হাজার লোক বাস করেন। তাঁর মৃত্যুতে কানাডার বাংলাদেশি কমিউনিটি এবং ওয়েন সাউন্ড শহরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শহরের লোকজন এক শোকমিছিলের আয়োজন করেছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকায় সগৌরবে বৈশাখী উৎসব পালিত
সিটি মেয়র ইয়ান বডি রহমানের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, ‘শরীফ আমাদের সম্প্রদায়ের কমিউনিটির একজন ব্যতিক্রমী সদস্য ছিলেন, যিনি সিটি ও কাউন্টি কমিটিতে তাঁর সময় উৎসর্গ করেছিলেন। সেই সঙ্গে একজন সফল উদ্যোক্তা এবং একজন নিবেদিতপ্রাণ পারিবারিক মানুষ ছিলেন। তাঁর চলে যাওয়া আমাদের কমিউনিটির জন্য একটি দুঃখজনক ঘটনা।’
২৫ আগস্ট ওয়েন সাউন্ড শহরের সিটি হলে শহরের পতাকা অর্ধনমিত ছিল। তাঁর রেস্তোরাঁর সামনে একটি অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ‘গো ফান্ড মি’ নামে একটি গ্রুপ তাঁর পরিবারকে সাহায্য করার জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার কানাডিয়ান ডলার ওঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ১ লাখ ৪১ হাজার ডলার সাহায্য পাওয়া গেছে। শরীফের জানাজা এবং লাশ কোথায় দাফন করা হবে, তা এখন পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।