কৃষক দল নেতা খন্দকার নাসিরের অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তারেক রহমানের কাছে মহিলা দলনেত্রীর আবেদন

Sanchoy Biswas
নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুর
প্রকাশিত: ৩:৫৯ অপরাহ্ন, ২৮ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৪:০২ অপরাহ্ন, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ফরিদপুর জেলা মহিলা দলের সদস্য মুন্নী রহমান কৃষক দল নেতা খন্দকার নাসিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। শুক্রবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, খন্দকার নাসিরের কর্মকাণ্ড ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

মুন্নী রহমান দাবি করেন, খন্দকার নাসির বিভিন্ন সময় দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং বারবার বিএনপির স্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন— ১৯৯৬ সালে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে নাসির মাত্র ৩,৯৮৪ ভোট পান। ২০০১ সালে চার দলীয় জোটের প্রার্থী শাহ মোহাম্মদ আবু জাফরের বিরুদ্ধে নৌকার প্রার্থী কাজী সিরাজুল ইসলামের পক্ষে কাজ করেন। ২০০৫ সালের উপনির্বাচনে ধানের শীষের বিপক্ষে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি শরাফত হোসেনকে সমর্থন করেন। ২০০৮ সালে বিএনপি প্রার্থীর বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী সিরাজুল ইসলামের পাশে দাঁড়ান। ২০১৮ সালেও নৌকার প্রার্থী আবদুর রহমানের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ করেন তিনি। ২০২৪ সালেও কৃষক দলের সহ-সভাপতি পরিচয় ব্যবহার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল প্রতীক)–এর পক্ষে কাজ করার অভিযোগ তোলেন মুন্নী।

আরও পড়ুন: অমানবিক পুশইনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করলো বিজিবি

মুন্নীর অভিযোগ, খন্দকার নাসির টাকা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম বিএনপির বিভিন্ন কমিটিতে যুক্ত করেছেন, যাদের কেউই বাস্তবে বিএনপিতে যোগ দেননি।

এমনকি আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী এবং মধুখালী উপজেলায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ—উভয় দলের কমিটিতে একই ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে অন্তত ৭০ জনের ক্ষেত্রে, যার জন্য তিনি নাসিরকে দায়ী করেন।

আরও পড়ুন: জামালপুরের আলোচিত মনিরুল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার

ফেসবুক পোস্টে মুন্নী রহমান দাবি করেন, তাঁর স্বামী যুবদল নেতা মিনহাজুর রহমান লিপনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, বিএনপি নেতাদের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, ৭ নভেম্বর বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। এগুলোর পেছনে ‘নাসির বাহিনী’ জড়িত বলে তাঁর অভিযোগ।

তিনি আরও দাবি করেন, আলফাডাঙ্গা থানার বিস্ফোরক মামলার অজুহাতে নাসিরের অনুসারীরা এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদাবাজি চালাচ্ছে, যা স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। একই সঙ্গে তিনি বিল চাপদহ দখলসহ আরও নানা অনিয়মের অভিযোগ তোলেন।

মুন্নী রহমান পোস্টে সতর্ক করে লেখেন—“খন্দকার নাসির মনোনয়ন পেলে ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির জামানত আবারও বাজেয়াপ্ত হবে।”

তিনি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুকে এলাকায় সৎ ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে লেখেন—সকল অভিযোগ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার জন্য কেন্দ্র থেকে এমন লোক পাঠানোর অনুরোধ করেন যারা ‘চাঁদাবাজির অর্থে’ প্রভাবিত হবে না।

পোস্টের শেষে তিনি তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দোয়া করেন।