অমানবিক পুশইনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করলো বিজিবি

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৯:৩১ অপরাহ্ন, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৯:৪০ পূর্বাহ্ন, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর অমানবিক পুশইনে বাংলাদেশে প্রবেশ করা বহুল আলোচিত অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুন ও তার শিশুসন্তানকে অবশেষে মানবিক বিবেচনায় নিজ দেশে ফিরিয়ে দিলো বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর আইসিপিতে আনুষ্ঠানিক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে সোনালী খাতুন এবং তার ৮ বছর বয়সী ছেলে মো. সাব্বির শেখকে সুস্থ-নিরাপদ অবস্থায় বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় মহানন্দা ব্যাটালিয়ন (৫৯ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: জামালপুরের আলোচিত মনিরুল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার

গত ২৫ জুন ২০২৫ সালে বিএসএফ কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ছয়জন ভারতীয় নাগরিককে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশইন করে। পরে তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৌঁছালে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক করে এবং ২২ আগস্ট আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা নারী সোনালী খাতুন ও তার দুই নাবালক সন্তানও ছিল। মানবিক দিক বিবেচনায় ২ ডিসেম্বর আদালত তাদের স্থানীয় জিম্মায় মুক্তির নির্দেশ দেন এবং কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশনা দেন।

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় গোপালগঞ্জে দোয়া মাহফিল

অন্তঃসত্ত্বা নারী ও দুই শিশুকে জোরপূর্বক পুশইন করায় সৃষ্ট মানবিক ঝুঁকি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিজিবি গভীরভাবে নজর দেয়। কূটনৈতিক পর্যায়ে ভারতের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের মাধ্যমে উভয় দেশের সম্মতিতে ভারতীয় নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হলো।

হস্তান্তর শেষে লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন “বিএসএফের এই অমানবিক পুশইন কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড এবং দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনা চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ধরনের পদক্ষেপ সীমান্ত অঞ্চলে মানবিক সংকট সৃষ্টি করছে এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ সীমান্ত ব্যবস্থাপনাকে বাঁধাগ্রস্ত করছে।”

তিনি আরও বলেন “বাংলাদেশ সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিজিবি মানবিক মূল্যবোধ, আন্তর্জাতিক আইন ও প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় বিজিবি দায়িত্বশীলতার অনন্য নজির স্থাপন করেছে।”

বিজিবি আশা প্রকাশ করে যে ভবিষ্যতে বিএসএফ এ ধরনের অমানবিক পুশইন কার্যক্রম বন্ধ করবে।