জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত উলিপুরের সেনা সদস্য মমিনুল ইসলামের মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

Sanchoy Biswas
উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৭:৫২ অপরাহ্ন, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৭:৫২ অপরাহ্ন, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতিসংঘের আওতায় দক্ষিণ সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় সদস্য নিহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় সারাদেশে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। নিহতদের মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর ও রাজারহাট উপজেলার দুই সেনাসদস্য রয়েছেন।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে হেলিকপ্টারযোগে নিহত দুই সেনাসদস্যের মরদেহ উলিপুর হেলিপ্যাডে পৌঁছায়। এ সময় সেনাবাহিনী ও জেলা-উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। শহীদ সেনাদের প্রতি গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দুটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ নিজ নিজ পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: পটুয়াখালী প্রেসক্লাব নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি জাকির, সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া

নিহত সেনাসদস্যরা হলেন— উলিপুর উপজেলার পাণ্ডুল ইউনিয়নের বাসিন্দা শহীদ মমিনুল ইসলাম এবং রাজারহাট উপজেলার ঠাটমারি গ্রামের বাসিন্দা শহীদ শান্ত মণ্ডল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে প্রতিপক্ষের হামলায় তারা শহীদ হন।

মরদেহ গ্রহণকালে উলিপুর হেলিপ্যাডে উপস্থিত ছিলেন উলিপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম মেহেদী হাসান, উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইবনে সাদিক সিদ্দিক, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী এবং বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ ও শুভানুধ্যায়ী।

আরও পড়ুন: নবীনগরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

শহীদ সেনাসদস্য মমিনুল ইসলামের মরদেহ উলিপুরে পৌঁছানোর খবরে পুরো উপজেলাজুড়ে শোকের আবহ সৃষ্টি হয়। স্বজনদের আহাজারি ও কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। এলাকাবাসী জানান, মমিনুল ইসলাম ছিলেন একজন সৎ, বিনয়ী ও দেশপ্রেমিক সৈনিক। দেশের সম্মান রক্ষা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে উপস্থিত প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় যে অবদান রাখছেন, তা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। তাদের এই আত্মত্যাগ জাতি চিরকাল কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

পরে শহীদ সেনাসদস্য মমিনুল ইসলামকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৩৫ বছর ৬ মাস। তিনি স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন। তার অকাল মৃত্যুতে পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসীর মাঝে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।