সোহাগের রক্ত কার হাতে?

Any Akter
,এম এ মতিন
প্রকাশিত: ৪:১৭ অপরাহ্ন, ১২ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১০:৩০ পূর্বাহ্ন, ১২ জুলাই ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকার বুকে নির্মমভাবে খুন হওয়া তরুণ সোহাগ — যার হত্যার পেছনে বিএনপির স্থানীয় নেতৃত্ব ও সন্ত্রাসী বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে — গোটা জাতিকে হতবাক ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। কিন্তু এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে আমরা কেউই সত্যিকার অর্থে অবাক হইনি। কারণ, সোহাগ  হলো সেই হাজারো নিরপরাধ তরুণের একজন, যারা এই দেশের বিকৃত রাজনীতির বলি।

তার মৃত্যু কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় — এটি বিএনপি ও আওয়ামী লীগের গ্যাংস্টার-শাসনের স্বাভাবিক পরিণতি। গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে এ দুই দল ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের নামে জনগণকে শোষণ, নিপীড়ন ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। এদের নেতৃত্বে আদর্শ নেই, মানবতা নেই — আছে শুধু ক্রিমিনাল স্যুট-বুট পরা ডাকাতদল, যারা জাতীয় পতাকাকে নিজেদের অপরাধ আড়াল করার আবরণ বানিয়েছে সত্যটা বলি — বাংলাদেশে আজ কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। যা হয় তা হলো মাফিয়া ধাঁচের দুই দলের মধ্যে সাজানো খেলা, যেখানে জনগণ শুধু একদল লুটেরা থেকে আরেকদল লুটেরার হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়।

আরও পড়ুন: গণ আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে হতাশার মুখোমুখি

এই তথাকথিত নির্বাচন আসলে:

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের মাধ্যম

আরও পড়ুন: জম্মু-কাশ্মীর: আলাদা পরিচয় থেকে জাতীয় মূলধারায়

নিজেদের অপরাধ থেকে আইনি সুরক্ষা নেওয়ার কৌশল

সরকারি পদকে ব্যক্তিগত লুটপাটের প্ল্যাটফর্ম বানানো

বিরোধী মত দমন, একমত কেনা, সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করার অস্ত্র

“গণতন্ত্র” বলেও যা চালানো হচ্ছে, তা আসলে একটি সন্ত্রাসী, দুর্নীতিপরায়ণ ও নিপীড়ক ব্যবস্থা।

বিএনপি-আওয়ামী লীগের জাতিনাশী রেকর্ডঃ-

দেখে নিই কীভাবে এই দুই দল মিলে বাংলাদেশকে ধ্বংস করেছে:

১. লুটপাট ও দুর্নীতি

প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার

দুর্নীতির দায়ে একটিও শাস্তি নেই

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয় দাসে পরিণত

২. খুন-গুম-নিপীড়ন

রাজনৈতিক বিরোধীদের হত্যা, গুম ও নির্যাতন

উভয় সরকারের আমলেই হাজারো মানুষ নিখোঁজ

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস

৩. মাদক ও অস্ত্রের বাণিজ্য

দলীয় ছত্রছায়ায় মাদক কারবারিদের অভয়ারণ্য

রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের হাতে অবৈধ অস্ত্র

৪. জমি দখল ও চাঁদাবাজি

সাধারণ মানুষের সম্পত্তি দলীয় ক্যাডারদের দখলে

ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়

৫. গণমাধ্যম দমন

সাংবাদিক নির্যাতন, মামলা, কারাবন্দি

মিডিয়াকে কিনে বা ভয় দেখিয়ে নিয়ন্ত্রণ

৬. তরুণ প্রজন্মকে বিপথে চালনা

ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলোকে অস্ত্রধারী গ্যাংয়ে পরিণত করা

বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজকে সংঘর্ষের রণক্ষেত্র বানানো

এখন সোহাগের মতো নিরপরাধ তরুণ কবরস্থ হলেও, তার খুনিরা দলীয় পতাকার ছায়ায় বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায় — কারণ তারা জানে, বিচার হবে না।

আলাদা পতাকা হলেও কর্মকান্ড একই রকম :

শ্লোগান, রঙ বা অতীত ইতিহাসে বিভ্রান্ত হবেন না — বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এক মুদ্রার দুই পিঠ।

তাদের একমাত্র আদর্শ: লোভ।

একমাত্র উদ্দেশ্য: ক্ষমতা দখল।

একমাত্র আনুগত্য: নিজেদের প্রতি।

এরা ধর্ম, দেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদ সবকিছুকে রাজনীতির হাতিয়ার বানিয়ে নিজেদের অপরাধ আড়াল করে — সমাজকে বিভক্ত করে, ভয় দেখিয়ে শাসন করে।

ক্ষমতায় গেলে তারা আইনের ঊর্ধ্বে — অপ্রতিরোধ্য, দায়মুক্ত, সর্বক্ষমতাধর। আর আমরা, জনগণ, তাদের হাতের খেলনা মাত্র।

এবার বলতেই হবেঃ-আর না!

১।এখন যদি আমরা চুপ থাকি, আমরা দোষী।

২।যদি আবার এই দুই দলকে ভোট দিই, নিজেদের মৃত্যুদণ্ডে সই করি।

৩।যদি ভাবি তারা একদিন ঠিক হবে, তবে আমরা বোকা।

এটা রাজনীতি না — এটা জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধযুদ্ধ।

জিতবে শুধু রাজনৈতিক অপরাধীরা — হারবে আমরা, সাধারণ মানুষ।

পথ একটাই: জনগণের রাজতন্ত্রঃ-

আমরা আর কোনো বিকৃত জোট চাই না। আর কোনো পুরনো বোতলে পুরনো বিষ নয়।

আমরা চাই একটি গণভিত্তিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক নতুন শাসনব্যবস্থা — জনগণের রাজতন্ত্র:

জনগণের মতামতের ভিত্তিতে ক্ষমতা

রাজনৈতিক অপরাধে কঠোর শাস্তি ও দ্রুত বিচার

সীমিত মেয়াদের নির্বাচিত প্রতিনিধি, পরিচ্ছন্ন ও অপরাধমুক্ত প্রার্থী

রাজনৈতিক দলের বদলে নাগরিক পরিষদ

সত্যিকারের গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা

বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কোনোদিনই ঠিক হবে না — তাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে।

ওদের রাজনীতি নয়, কবর প্রয়োজনঃ-

সোহাগের  রক্ত যেন বৃথা না যায়।

তার নাম হোক জাগরণের প্রতীক।

চলুন আমরা সকলে একত্রিত হই — প্রতিবাদ করি, প্রতিরোধ গড়ি, মুক্তির আন্দোলন শুরু করি।

সাফ জানিয়ে দিই:

বিএনপি আর নয়

আওয়ামী লীগ আর নয়

ছলনা-ভরা নির্বাচন নয়

নীরবতা নয়

জাতির উদ্দেশ্যে বার্তাঃ-

এটা কোনো প্রতিবাদ না — এটা মুক্তিযুদ্ধ!

এটা কোনো দলের বিরুদ্ধে না — এটা জনগণের পক্ষে।

এটা শুধু আজকের জন্য নয় — এটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের টিকে থাকার লড়াই।

১।বাংলাদেশ কোনো দলের সম্পত্তি নয় — এটি জনগণের রাষ্ট্র।

২।শহীদদের কবর থেকে জেগে উঠেছে ন্যায়ের আহ্বান।

৩।মানুষ জেগেছে — এবার পালানোর পথ নেই।

সোহাগ হারিয়ে গেছে, কিন্তু তার রক্ত থেকে আগুন জ্বলবে।

আর বিএনপি-আওয়ামী লীগের কর্মকান্ডের কারণেই তাদের রাজনৈতিক কবর খুঁড়ে দিচ্ছে এ দেশের জনগণ — চিরতরে। 

-লেখক রাজনৈতিক বিশ্লেষক