ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
ইসরায়েল আক্রমণ করলে আরও ভয়াবহ পরাজয়ের মুখে পড়বে
ইসরায়েল কোনো আগ্রাসী পদক্ষেপ নিলে আবারও বড় ধরনের পরাজয়ের মুখে পড়বে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যাম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তেহরান সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত এবং জিওনিস্ট শাসনের (ইসরায়েল) শত্রুতামূলক আচরণ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরাগচি বলেন, আমরা সাম্প্রতিক যুদ্ধ থেকে বহু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং বাস্তব যুদ্ধে আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের সক্ষমতা পরীক্ষা করেছি। যদি জিওনিস্ট শাসন নতুন কোনো হামলা চালায়, তবে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে।
আরও পড়ুন: 'ফিফা শান্তি পুরস্কার’ পেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল আমাদের তেল স্থাপনা লক্ষ্য করে যুদ্ধকে আঞ্চলিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমরা তা সফলভাবে নিয়ন্ত্রণে এনেছি এবং যুদ্ধকে সীমিত রাখতে পেরেছি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদন ছাড়া ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করতে পারত না। তিনি বলেন, নেতানিয়াহু একজন যুদ্ধাপরাধী, এবং এখন পুরো অঞ্চল বুঝতে পেরেছে—তাদের প্রকৃত শত্রু হলো ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: ডনবাস ইস্যুতে কোনো ছাড় নয়, কঠোর অবস্থানে পুতিন
পারমাণবিক ইস্যুতে আলোচনার বিষয়ে আরাগচি বলেন, আমরা আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ নিরসনে আলোচনা করতে প্রস্তুত। এটি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। ন্যায্য একটি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু অগ্রহণযোগ্য শর্ত আরোপ করেছে যা বাস্তবসম্মত নয়। আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে কোনো আলোচনা হবে না—নিজের অস্ত্র শত্রুর হাতে তুলে দেওয়া নির্বুদ্ধিতা হবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমরা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করব না। যুদ্ধের মাধ্যমে যা অর্জন করা যায়নি, রাজনৈতিক পথে তা পাওয়া সম্ভব নয়। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করব না, তবে পরোক্ষভাবে সমঝোতায় পৌঁছানো যেতে পারে।
গত জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলি হামলার পর ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর অবস্থা প্রসঙ্গে আরাগচি জানান, বোমায় বিধ্বস্ত স্থাপনাগুলোর নিচে পারমাণবিক উপকরণগুলোই রয়ে গেছে, অন্য কোথাও সরানো হয়নি। আমাদের ভবন ও যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অক্ষত রয়েছে।
ইউরোপীয় তিন দেশের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পদক্ষেপকে অবৈধ বলে আখ্যা দেন তিনি। বলেন, ইউরোপের স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম সক্রিয় করা বেআইনি। আমাদের বিরুদ্ধে কোনো আন্তর্জাতিক ঐক্যমত্য নেই। আমাদের অগ্রাধিকার হলো প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা। পশ্চিমাদের সঙ্গেও আমরা আলোচনায় প্রস্তুত, তবে কোনো চাপ বা শর্ত মেনে নয়।
সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে আরাগচি বলেন, ইরান সিরিয়ার স্বাধীনতা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা ইসরায়েলি আগ্রাসনের কঠোর নিন্দা জানাই।
সূত্র: আল জাজিরা





