আর কেউ যেন ধর্ষণের মতো অপরাধের সাহস না পায়: তারেক রহমান

মাগুরায় নির্মম যৌন নির্যাতনের শিকার আট বছর বয়সী শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ, গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্মম পাশবিকতায় আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনা দেশবাসীর মতো আমাকেও ব্যথিত করেছে। তার মৃত্যুর সংবাদে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা দেশ। এই মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা সারা দেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে। আছিয়ার ওপর ঘটে যাওয়া নির্মম পাশবিক ঘটনার প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে শহর থেকে গ্রামে। রাজপথ উত্তপ্ত হয়েছে মিছিল আর স্লোগানে। একই সঙ্গে তার ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা ছিল প্রতিটি মানুষের।
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মচারীদের বেতন সমন্বয়ে জাতীয় বেতন কমিশনের প্রথম সভা আজ
বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সিএমএইচ থেকে আসা খবরে শোক আর ক্ষোভে একাকার মানুষ ধিক্কার জানাচ্ছে মানুষরূপী কুলাঙ্গারদের। আমি শুরুতে এ ঘটনা জানার পর তার চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলাম। অতীতের ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে ধর্ষণকারীদেরকে বিচারের আওতায় না এনে বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করার ফলে দেশে ধারাবহিকভাবে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার ফলে আইনের ফাঁক দিয়ে ধর্ষণকারীরা বারবার রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে।
যার ফলে ধর্ষণের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। আধুনিক এই যুগে মানবজাতি এরূপ অমানবিক, পৈশাচিক এবং বর্বরোচিত কাজে লিপ্ত হতে পারে তা কল্পনাতীত। ধর্ষণ শুধু অপরাধই নয়, মানবতার বিরুদ্ধে চরম আঘাত এবং সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের ভয়াবহ চিত্র। আমাদের সমাজে যে নির্মম ও বর্বরোচিত ঘটনাগুলো ঘটে চলছে, তা মানবতা ও নৈতিকতার মৌলিক ভিত্তিকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আমরা দেখছি পবিত্র মাহে রমজান মাসেও ধর্ষণের ঘটনা থামছে না।
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনী প্রধানের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই: আইএসপিআর
দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশুদের ওপর চলমান নিপীড়ন, হেনস্তাকরণ ও ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কাজ রোধে সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যূত্থানের পর থেকে নারী হেনস্তা, হয়রানি, ধর্ষণ বা ধর্ষণের হুমকির মতো ঘটনা মানুষ আর প্রত্যাশা করে না। তারপরেও এই ঘটনাগুলো ঘটেই চলেছে। নারী, কিশোরী ও শিশুদের প্রতি যে কোনো ধরনের সহিংসতা বা হয়রানি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদা নিশ্চিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। এ ছাড়াও একটি বিস্তৃত শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ চলাচল, নাগরিক স্বাধীনতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখতে হবে। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিতে হবে আইনিভাবে। এই ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সমাজে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনা শুধু বর্তমান সমাজকে কলুষিত করছে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও এক ভয়ংকর দৃষ্টান্ত তৈরি করছে। এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।’
তারেক রহমান আছিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান