আবরার ফাহাদের দেখানো পথেই রাজনীতি করছে এনসিপি: নাহিদ ইসলাম

“দিল্লি না ঢাকা” এই স্লোগান উঠেছিল আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদী মিছিল থেকে। সেই স্লোগান এবং চেতনাকে ধারণ করেই রাজনীতি করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এমন মন্তব্য করেছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুর ১টা ২০ মিনিটে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, “আজকের এই দিনে আমরা আবরার ফাহাদকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি, তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।”
আরও পড়ুন: ১৫ আগস্ট ঘিরে আ. লীগ-ছাত্রলীগকে সড়কে নামতে দেওয়া হবে না: ডিএমপি কমিশনার
তিনি বলেন, “আবরার ফাহাদ আমাদের যে পথ দেখিয়ে গেছেন, এনসিপি সেই পথেই রাজনীতি করছে। তিনি বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি, ভারতের আধিপত্যবাদের বিরোধিতা এবং আগ্রাসনবিরোধী চেতনাকে তুলে ধরেছেন। সেই পথ ধরেই জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনীতি করে যাচ্ছে। সেই পথ ধরেই সংঘটিত হয়েছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থান।”
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “আবরার ফাহাদ থেকে শুরু করে আবু সাইদসহ সকল শহীদদের আমরা স্মরণ করি। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সময় গত ১৬ বছরে যারা গুম, খুন এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের সবার স্মৃতিকে আমরা ধারণ করি। ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’য় শহীদদের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে কাজ করছি আমরা। তারা যে স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন—আমরাও সেই রাজনীতির পথ বেছে নিয়েছি।”
আরও পড়ুন: সরকারি প্রশিক্ষণে বাড়লো ভাতা ও সম্মানী
বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ ২০১৯ সালে হলবাসায় ছাত্রলীগের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত হন—এ কথা স্মরণ করে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, “তার অপরাধ ছিল, তিনি দেশের স্বার্থে কথা বলেছিলেন। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী ফেনী নদী চুক্তির বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সেই অপরাধেই তাঁকে হত্যা করা হয়। আবরার ছিলেন আধিপত্যবিরোধী চেতনার প্রতীক, এবং সেই আন্দোলন ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের এক ঐতিহাসিক মাইলফলক।”
তিনি আরও বলেন, “২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর ২০১৯ সালে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড ছিল একটি বড় ঘটনা। তার মৃত্যুর প্রতিবাদে গড়ে ওঠা আন্দোলন দেশের রাজনীতিতে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ভারতের আধিপত্যবিরোধী একটি নতুন ধারার সূচনা হয়েছিল তখন।”
এ সময় আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, মা রোকেয়া খাতুন, এবং এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, এবং এনসিপি নেতারা সাইফুল্লাহ হায়দার, আসাদুল্লাহ আল গালিব, আবু সাঈদ লিয়ন, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ফিহাদুর রহমান দিবস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও এনসিপির অঙ্গ সংগঠন যুব শক্তি ও শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।