জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠনে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

দেশে গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার এবং জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রোববার (১৭ আগস্ট) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে জাতীয় কবিতা পরিষদের সঙ্গে বিএনপি মিডিয়া সেলের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পাচার করা ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দারা
তারেক রহমান বলেন, "এই দেশের মালিকানার একমাত্র দাবিদার এর নাগরিকরা। সেই মালিকানার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হলে ভোটাধিকার, বাকস্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।"
তিনি বলেন, "দেশে একটি জবাবদিহিমূলক অবস্থা তৈরির কোনো বিকল্প নেই। এটা সম্ভব কেবলমাত্র মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে।"
আরও পড়ুন: মিশন থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানো নিয়ে যা বললেন পরিবেশ উপদেষ্টা
‘লেখার স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই নির্বাচন জরুরি’
কবি-সাহিত্যিকদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, “আপনারা মত প্রকাশ, সমালোচনার এবং লেখার স্বাধীনতার কথা বলেছেন। এই অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা তখনই সম্ভব, যখন আমরা একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারব।”
তিনি আরও বলেন, “আজ আমাদের ওপর দায়িত্ব এসেছে শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করার। এই সুন্দর আয়োজনে আপনাদের কণ্ঠে যেন ঐক্যের প্রতিধ্বনি উচ্চারিত হয়, সেই কামনাই করি।”
বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের আদর্শিক অবস্থান এক ও অভিন্ন। হয়তো রাজনৈতিক মতাদর্শে ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু দেশ ও জাতির সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের প্রত্যয় অভিন্ন। আমরা সেই স্বৈরাচারবিরোধী ঐক্যের উত্তরসূরি।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ যাতে মৌলবাদের কোনো অভয়ারণ্য হয়ে না ওঠে, সেটা আমাদের প্রত্যাশা। এ বিষয়ে আমরা কবি-সাহিত্যিকদের মতোই সংবেদনশীল।”
তারেক রহমান বলেন, “কবি-সাহিত্যিকরা ইতিহাসের নানা পর্যায়ে জাতির কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছেন। উইলিয়াম শেকসপিয়ার, ওয়ার্ডসওয়ার্থ যেমন ইংরেজি সাহিত্যের প্রতীক হয়ে উঠেছেন, তেমনি নজরুল ও রবীন্দ্রনাথ এ উপমহাদেশের চেতনার প্রতীক। আমরা শহীদ জিয়াউর রহমানের অনুপ্রেরণায় ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ গানকে দলীয় সংগীত করেছি, যা জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসেবে আজও আমাদের পথ দেখায়।”
“আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে, কিন্তু আপনারা কবি-সাহিত্যিকরা মনোজগতের গভীরতা থেকে যেভাবে জাতির বেদনা ও আশা-আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরেন, তাতে বোঝা যায়, আপনারা অসাধারণ— আমরা সাধারণ।”
জাতীয় সংগীত ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান। সভা পরিচালনা করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান কবি নুরুল ইসলাম মনি, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদি আমিন, কবিতা পরিষদের উপদেষ্টা কবি মতিন বৈরাগী, সাধারণ সম্পাদক কবি রেজাউল উদ্দিন স্ট্যালিন, সহ-সভাপতি কবি অনামিকা হক লিলি, কবি এবিএম সোহেল রশীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি শ্যামল জাকারিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক কবি নুরুন্নবী সোহেল, কবি শাহিন চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কবি-সাহিত্যিকরা বাক-স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার এবং লেখালেখির পরিবেশ রক্ষায় তাদের অবস্থান তুলে ধরেন এবং একগুচ্ছ দাবি উত্থাপন করেন।