ফরিদপুরের মধুখালীতে বিজিবি মোতায়েন

Abid Rayhan Jaki
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:৩৯ অপরাহ্ন, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | আপডেট: ১:০৭ অপরাহ্ন, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

মধুখালীর সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, আজ (২৪ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর চার প্লাটুন সদস্য মোতায়েন করেছে।

বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানিয়েছেন যে, বিজিবি সদস্যরা ফরিদপুর সদর এবং মধুখালী উপজেলার বালিয়াকান্দি পঞ্চপল্লী ও বাঘাট বাজার এলাকায় ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের সাথে যৌথভাবে টহল পরিচালনা করছে।

আরও পড়ুন: অমানবিক পুশইনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করলো বিজিবি

তিনি আরও জানান,বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটসহ যৌথ বাহিনীর সঙ্গে বিজিবির টহলের পাশাপাশি গ্রাম পুলিশ অবস্থান করছে। এর আগে সকালে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এর ফলে ওই এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। পরে দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এদিকে ফরিদপুরের মধুখালীর বালিয়াকান্দি পঞ্চপল্লীর কালি মন্দিরে আগুনকে কেন্দ্র করে দুই সহোদর ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতে মধুখালী থানায় এ মামলা তিনটি নথিভুক্ত করা হয়।

আরও পড়ুন: জামালপুরের আলোচিত মনিরুল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার

মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন জানান, এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকি ১০ জনকে থানায় আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে আসামি ও আটকদের নাম পরিচয় এখনই জানানো সম্ভব নয়। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো যাবে।

জানা গেছে, পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা ও মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার প্রতিবাদে মধুখালী রেলগেটে মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়। স্থানীয় সর্বসাধারণের ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচি পালনে সেখানে সমবেত হয় পাঁচ শতাধিক জনতা। আনুমানিক আধা ঘণ্টা স্থায়ী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে বেলা ১১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা মধুখালীর ঈদগাঁ ময়দানে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। পরে মিছিলটি মহাসড়কে উঠে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ধরে কামারখালী সেতুর দিকে এগোতে থাকে। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে বিক্ষোভকারীরা খণ্ড খণ্ড হয়ে মিছিল করতে থাকে। একাধিক ভাগে বিভক্ত বিক্ষোভকারী মালেকা চক্ষু হাসপাতালের সামনে, নওয়াপাড়ার মোড়, মাঝিবাড়ি ও বাগাটের ঘোষঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়।

বাগাটের ঘোষঘাটে বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি এনে অবরোধ করে এবং সড়কের মাঝে গাছের গুঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। নওয়াপাড়ার মোড়ে একটি ইটভর্তি ট্রাক সড়কের মাঝখানে আড়াআড়িভাবে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে। এতে জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং একপর্যায়ে পুলিশের দিকে ইট ছুড়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই জায়গায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিক্ষোভ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাদের ওপর পুলিশের গুলি ও হামলার প্রতিবাদ জানান। জেলা প্রশাসক এ ঘটনার তদন্ত হবে বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা জেলা প্রশাসকের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।