নেত্রকোণায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ

Abid Rayhan Jaki
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:০৩ অপরাহ্ন, ০৮ জুন ২০২৪ | আপডেট: ৫:০৭ পূর্বাহ্ন, ০৯ জুন ২০২৪
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে নেত্রকোণার সদর উপজেলার কাইলহাটি ইউনিয়নের ভাসাপাড়া গ্রামের একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। শনিবার (৮ জুন) দুপুর থেকে ওই বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোণা জেলার পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুপুরে প্রাথমিক অভিযান চালিয়ে ওই বাড়ি থেকে একটি ভারতীয় পিস্তল ও কিছু সন্দেহজনক জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেত্রকোণায় যুবদলের মিলাদ মাহফিল

তবে ওই বাড়িতে কেউ ছিল কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্তও ওই বাড়িটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে জাফলং থেকে লুট হওয়া ৭ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটিতে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

তবে এ বাড়িটি সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে ছিল অনেক কৌতূহল। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, ভাসাপাড়া এলাকায় জঙ্গি সন্দেহে ঘিরে রাখা ওই বাড়ি আটপাড়া উপজেলা নোয়াপাড়া গ্রামের আবদুল মান্নান নামের এক ব্যক্তি প্রায় ২০ বছর আগে নির্মাণ করেন। আবদুল মান্নান পেশায় ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) শিক্ষক। তিনি সেখানে একটি কলেজ স্থাপন করতে চান। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। দুই বছর আগে বাড়িটি তিনি এক ব্যক্তির কাছে ভাড়া দেন। ভাড়া দেওয়ার পর থেকে ভাড়াটিয়ার বাড়ির সীমানাপ্রাচীর আরও উঁচু করেন। এরপর নারকেলগাছ, আমগাছ ধরে সীমানাপ্রাচীরে প্রায় ২০টির মতো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। বাড়িটির ভেতরে দুটি পুকুর রয়েছে। ওই বাড়িতে স্থানীয় কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় না।

এ বিষয়ে কাইলাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাড়িটির মালিক প্রফেসর আবদুল মান্নান। তার বাড়ি জেলার আটপাড়া উপজেলায়। বছর তিনেক আগে বর্তমান বাসিন্দাদের কাছে বাড়িটি ভাড়া দেওয়া হয়। তবে ভাড়া নেওয়া ব্যক্তিদের এলাকার লোকজন কখনো দেখেননি। পুরো বাড়িটি সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে আছে।’

এ দিকে জানা যায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দুপুর ১টার দিকে নেত্রকোণা মডেল থানার ওসি আবুল কালামের নেতৃত্বে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় বাড়িটির নিচতলার একটি কক্ষ থেকে বিদেশি পিস্তল, ১৭ রাউন্ড গুলি, প্রচুর পরিমাণ খেলনার পিস্তল, দুটি ওয়াকিটকি, একটি হ্যান্ডকাপ, এক বস্তা জিহাদি বইসহ বিভিন্ন জিনিস পাওয়া যায়।

পুলিশের ধারণা, বাড়িটিতে বোমা–জাতীয় বিস্ফোরক দ্রব্য থাকতে পারে। ঘটনাস্থল নেত্রকোণা পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমদ পরিদর্শন করেছেন।

তিনি বলেন, পুলিশের বিশেষায়িত টিম কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বাড়িটি একটি জঙ্গি আস্তানা। এখানে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। বোমাবিশেষজ্ঞ টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছালে, ভেতরে প্রবেশ করার পর বিস্তারিত বলা যাবে।

এ প্রসঙ্গে এন্ট্রিটেরিয়ালিজম ইউনিট ময়মনসিংহ বিভাগের অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক আসাদুল্লাহ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বিশেষজ্ঞ দল, সোয়াট ইউনিটের বিশেষজ্ঞ দলকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসলে ভেতরে গিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান করা হবে।’