নরসিংদীর রায়পুরায় বালু উত্তোলনে ভাংছে নদীর তীর, মানুষের ভ

নরসিংদীর চরাঞ্চল হিসেবে খ্যাত বৃহত্তর রায়পুরা অঞ্চলের মেঘনা নদীতে দিন দিন ভাঙছে নদীর তীর।ফলে কমছে কৃষি জমি, অন্যত্র সরাতে হচ্ছে বাড়ি-ঘর। প্রতিকার না পেয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ। সম্প্রতি রায়পুরা উপজেলার সাহারখোলা ও আব্দুল্লাহচরে গিয়ে দেখা যায়, ছয়শ থেকে আটশ মিটার বাঁধসহ বেশকিছু জমি মেঘনার তীর ভেঙে পানিতে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দিন-রাত অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তীর ভাঙছে। একদিকে নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর গভীরতা বাড়ছে অপরদিকে প্রবল স্রোত। এই দেইয়ে মিলে নদী তীরে বড় বড় ফাটল দেখা দেয়। আর সামান্যতম ঢেউয়ে কয়েক একর জায়গাজুড়ে একের পর নদীর তীর ভেঙে পানিতে বিলীন হচ্ছে। এতে করে আবাদি জমি নদীতে বিলীত হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও বাড়ি ঘর বিলীন হচ্ছে। আবার কেউ কেউ নদীতে বাড়ি ঘর বিলীন হওয়ার ভয়ে অন্যত্র বাড়ি-ঘর সরাতে বাধ্য হচ্ছেন। এবিষয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আব্দুল আউয়াল নামে এক কৃষক জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এখন ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরফলে হুমকিতে রয়েছে উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের মাঝেরচর, রায়পুরা ইউনিয়নের সাহারখোলা এবং শ্রীনগর ইউনিয়নের আব্দুল্লাহচর গ্রামহগুলো।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেত্রকোণায় যুবদলের মিলাদ মাহফিল
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও কয়েকজন বাসিন্দা জানান, নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন কোম্পানির কাছে নদীর বালু বিক্রি করে একাধিক চক্র। এরফলে তারা শতকোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছে। তাই তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
স্থানীয়রা আরও জানান, এবছরের ১৫ এপ্রিল রায়পুরার মেঘনা নদীতে কাতলার চর মৌজার দক্ষিণ পাশে এক কিলোমিটার চর ড্রেজিংয়ের ইজারা পায় নরসিংদী শহরের আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ হোসেন সরকারের মালিকানাধীন মেসার্স আশরাফ হোসেন ট্রেডার্স। এর পর থেকে ইজারাকৃত স্থান ছাড়াও মেঘনার বিভিন্ন স্থান থেকে তারা বালু উত্তোলন করছে।
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে জাফলং থেকে লুট হওয়া ৭ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার
নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী শাহাবুদ্দিন আহমেদ জানান, কাতলার চর মৌজার দক্ষিণ পাশের এক কিলোমিটার চর ড্রেজিংয়ের জন্য পাউবোর পক্ষ থেকে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু সীমানা অতিক্রম করে নদীজুড়ে বালু উত্তোলন করছে বলে জানা গেছে। পরে পাউবোর একটি টিম ভাঙন এলাকা পরিদর্শন শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।
রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান জানান, ভাঙনের অবিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং একাধিকার অভিযানও হয়েছে। এখন ভাঙনের কারণ খুঁজে বের করে দোষীদের বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।