মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত ব্যবসায়ী গোলাম মর্তুজার মুক্তি দাবি

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:৪২ অপরাহ্ন, ১১ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ১১:১৯ পূর্বাহ্ন, ১৫ অগাস্ট ২০২৫
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তার স্ত্রী প্রিন্সিপাল নাদিরা মর্তুজা। ছবিঃ সংগৃহীত
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তার স্ত্রী প্রিন্সিপাল নাদিরা মর্তুজা। ছবিঃ সংগৃহীত

ছাত্র হত্যার দায়ে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গ্রেফতারকৃত বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রকৌশলী এসএম গোলাম মর্তুজার অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছে তার পরিবার। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তার স্ত্রী প্রিন্সিপাল নাদিরা মর্তুজা এক লিখিত বক্তব্যে এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, একটি কুচক্রিমহল তাঁর প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ক্ষ্যান্ত হয়নি, গ্রেফতার পরবর্তী সময়েও তার পরিবারকে সন্ত্রাসী দ্বারা হুমকি প্রদান করে আসছে। 

আরও পড়ুন: রাজশাহীতে একই পরিবারের ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার

গোলাম মর্তুজা কখনই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, বরং জুলাই-আগষ্ট অভ্যুত্থানের  সময় তিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অংশ নিয়েছিলেন এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন মিসেস মর্তুজা।

তিনি যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে মিথ্যা মামলা থেকে গোলাম মর্তুজার নাম বাদ দেয়ার দাবি জানান এবং যথাযথ আইনি সহায়তা ও ন্যায় বিচার চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

আরও পড়ুন: ৪০ কেজি গাঁজাসহ বরখাস্ত পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার

মিসেস মর্তুজা জানান, সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গোলাম মর্তুজাকে আওয়ামী লীগ নেতা সাজিয়ে গত ৩ মার্চ সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক ০১:২০ মিনিটে র্যাব-১ এর একটি টিম ইঞ্জিনিয়ার এস এম গোলাম মর্তুজাকে আটক করে।  

তিনি বলেন, এস এম গোলাম মর্তুজা সরকার কখনো আওয়ামী লীগ বা এর কোনও অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠনের সাথে জড়িত নন। বরং তার পরিবার ঐতিহ্যগতভাবে বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত। গোলাম মর্তুজার বাবা কাবিল সরকার দীর্ঘ প্রায় তিন যুগ ধরে পল্লবীর মুসলিম বাজার ব্যবসায়ী সমিতির বিএনপি সমর্থিত সভাপতি ছিলেন। তাছাড়া তিনি গত ০৭/০৯/২০১৪ তারিখে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে বেগম খলেদা জিয়া স্বাক্ষরিত একটি সদস্যভুক্তি রশিদ নবায়ন করেন। ০৪/০৯/২০২১ তারিখে বিএনপির সাধারণ সমর্থক হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান ও মহানগর উত্তর বিএনপি নেতা আমিনুল হক স্বাক্ষরিত “তথ্য সংগ্রহ ফরম” পুরন করে। জুলাই আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এস এম গোলাম মর্তুজার অংশগ্রহণের বেশ কিছু স্থিরচিত্র ও ভিডিও চিত্রের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৪ এর গণ-আন্দোলনের সময় ছাত্র জনতার পক্ষে সমর্থন দিয়ে আন্দোলনকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে একাধিকবার রান্না করা খাবার ও পানি সরবরাহ করেন। এছাড়াও দেয়ালে গ্রাফিতি অঙ্কনের সময় রং ও তুলি সরবরাহ করে উৎসাহিত করেছেন। অথচ তাকে এখন আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দলের পল্লবী থানার আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য বানিয়ে মামলায় আসামি করে হেনস্তা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, তার স্বামী একজন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। নিজ উদ্যোগে তিনি এলাকায় স্কুল-মসজিদ, মাদ্রাসা, খেলার মাঠ নির্মাণ করেছেন। এসএম গোলাম মর্তুজার কোনো রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ক্যান্টনমেন্ট থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মো. মজনু মিয়া, বিএনপি নেতা মো. শাহ আলম এবং ব্যবসায়ী আকবর দেওয়ানও সাংবাদিকদের জানান যে, আওয়ামী লীগের  সাথে গোলাম মর্তুজার কোনো সম্পর্ক নেই এবং তিনি বিএনপির একজন সমর্থক।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মামলার পেছনে জমি সংক্রান্ত কোনো বিরোধ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করেন মিসেস মর্তুজা। তিনি জানান গোলাম মর্তুজাকে গ্রেফতারের পর কে বা কারা রাতের আধারে তাদের দু’টি জমি দখলে নিয়ে যায়। এছাড়া, গোলাম মর্তুজাকে হয়রানি করার জন্য মঙ্গলবার কুচক্রিমহল একই ধরনের আরেকটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।