সেতু ও গ্যাসের দাবিতে ভোলায় তিন উপদেষ্টার সামনে শুয়ে পড়ে জনতা
ভোলা জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা প্রশাসক মোঃ আজাদ জাহানের সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফায়জুল কবির খান, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন।
জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফায়জুল কবির খান সভায় বলেন, গৃহস্থালীর কাজে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না এবং শীঘ্রই ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে না। এ সময় সভায় উপস্থিত ভোলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তারা নানা শ্লোগানে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া করেন।
আরও পড়ুন: অমানবিক পুশইনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করলো বিজিবি
মতবিনিময় সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফায়জুল কবির খান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন তোপের মুখে পড়েন। পরে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ত্যাগ করার সময় তাদের গাড়ির সামনে শুয়ে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ দেখান। এ সময় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গোলাম নবী আলমগীর ও পুলিশের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভকারীরা সরে গেলে উপদেষ্টারা সভাস্থল ত্যাগ করেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন, ভোলা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রাইসুল আলম, জামায়াতে ইসলামের আমীর মাস্টার জাকির হোসাইন, ভোলা জেলার প্রবীন সাংবাদিক দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক আলহাজ্ব শওকাত হোসেন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির জেলা প্রতিনিধি এডভোকেট নজরুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সেক্রেটারি তারিকুল ইসলাম, আমরা ভোলাবাসীর সদস্য সচিব মীর মোশারেফ হোসেন ও মেহেদী হাসান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুর রহমান কিরন, সদস্য সচিব রাইসুল আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সোপান, এনামুল হক, জেলা জামিয়াতুল মোদাররেছিনের সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বিরুল হক নাইম, তরুণ উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার হেদায়েত আলী অরুন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: জামালপুরের আলোচিত মনিরুল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার
এর আগে, ভোলায় গ্যাসের বিপুল মজুত নিশ্চিত করতে জেলায় গ্যাসভিত্তিক ইউরিয়া সার কারখানা নির্মাণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে সরকার। এ উপলক্ষে জ্বালানি, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তিন উপদেষ্টা শুক্রবার ভোলার বিভিন্ন সম্ভাব্য স্থাপনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সকালে তারা বোরহানউদ্দিন উপজেলার বাপেক্সের গ্যাসক্ষেত্র পরিদর্শন করেন। জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফায়জুল কবির খান জানান, ভোলায় দুটি গ্যাসক্ষেত্রের অধীনে ৯টি কূপের খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া আরও ৫টি নতুন কূপের খনন কাজ দ্রুত শুরু হবে এবং ভবিষ্যতে অতিরিক্ত ১৪টি কূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, “ভোলায় প্রাপ্ত গ্যাস দেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং স্থানীয় গ্যাসের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে নতুন শিল্প স্থাপনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”
শিল্প ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান জানান, ভোলায় পর্যাপ্ত গ্যাস থাকায় একটি আধুনিক ইউরিয়া সার কারখানা নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ ও সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। এছাড়াও, সার ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করতে সরকার ৩৪টি বাফার গোডাউন নির্মাণ করছে, যার মধ্যে একটি গোডাউন ভোলায় হচ্ছে এবং কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।





