ওসির অপসারণের দাবিতে দিনভর বিক্ষোভ ঘেরাও মোহাম্মদপুর থানা

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার ওসির পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে মোহাম্মদপুরের স্থানীয় জনগণ। আজ দীর্ঘক্ষণ মোহাম্মদপুর থানা ঘেরাও করে থানার সামনে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।
এর আগে এক সাংবাদিকের মোবাইল ফোন ছিনতাই নিয়ে "এক ঘন্টায় মোহাম্মদপুর থানা" শিরোনামে ফেসবুক স্ট্যাটাস ব্যাপক ভাইরাল হয়। এতে বলা হয় ওসি বলেছেন :- আমি ইফতেখার মোহাম্মদপুর থানার ওসি। আমি এত দামি ফোন ব্যবহার করতে পারি না। আপনি এত দামি ফোন নিয়ে ঘোরাফেরা করলে ছিনতাই তো হবেই। এছাড়া ওই সাংবাদিক লেখেন যে থানায় গিয়ে সহযোগিতা না পেয়ে পরবর্তীকালে মোহাম্মদপুর এলাকায় এসে একজন এএসআইকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে এবং ওই ছিনতাইকারী বসে আছে দূর থেকে দেখিয়ে দেওয়ার পরেও পুলিশ কোন সহযোগিতা করেনি। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে শুক্রবার দিনভর মোহাম্মদপুর থানায় অবস্থান করেন তেজগাঁও অপরাধ বিভাগের ডিসি ইবনে মিজান। তার তত্ত্বাবধানে ওই সাংবাদিকের মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ। তারপরেও বিক্ষুব্ধ জনতাকে ঠেকানো যায়নি। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মোহাম্মদপুর থানার ওসি ইফতেখার কে ফ্যসিস্টের দোসরদের সহযোগী উল্লেখ করে তার অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ দেখায় তারা।
আরও পড়ুন: ভোলাগঞ্জে লুট হওয়া সাদা পাথর ফেরত ও লুটকারীদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ হাইকোর্টের
এর আগে আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করতে গেলে হাত কড়া লাগানোর পরেও ওসির নির্দেশে তাকে ছেড়ে দিয়ে আসে পুলিশ। এলাকাবাসী বলছেন ওসি ইফতেখার মোহাম্মদপুর থানার যোগদানের পর থেকে চাঁদাবাজি ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। নির্ধারিত ক্যাশিয়ারদের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করে টাকা আদায় করেন ওসি ইফতেখার। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তার প্রতি খুবই রুষ্ট হলেও ডিএমপি হেডকোয়ার্টারের বিশেষ মহলের স্নেহধন্য হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। বিভিন্ন ওয়ারেন্ট তামিল করতে গেলে আসামি আটকের পর ওসির নির্দেশে তাদের ছেড়ে দিয়ে আসেন সাব ইন্সপেক্টররা। পরে ওসি ওই ব্যক্তিদের কাছ থেকে মাসোহারা আদায় করেন। অন্য সাব ইন্সপেক্টর ও তার ক্যাশিয়ারদের মাধ্যমে টাকা আদায় করা হয়।
এদিকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ায় এলাকাবাসী ওসির উপর খুবই রুষ্ট। কয়েক দফা ওসির অপসারণ দাবি করলেও ডিএমপি হেডকোয়াটার থেকে কোন সাড়া মেলেনি। কয়েক মাস আগেও উচিত দেখার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতার সঙ্গে থানায় বসে বৈঠক করার খবর ভাইরাল হয়েছিল। তখনও ওসিকে মাফ করে দেন পুলিশ কমিশনার। আইন উশৃঙ্খলার অবনতি ও ওসির চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ওসি ইফতেখারের অপসারণ দাবিতে বিকেলে থানা ঘেরাও করে উত্তেজিত এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন: ভোলাগঞ্জে সাদা পাথর লুট: দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে হাইকোর্টে রিট
এ পরিস্থিতিতে তেজগাঁও অপরাধ বিভাগের ডিসি ইবনে মিজান তাৎক্ষণিকভাবে দুই কর্মকর্তাসহ থানার চার পুলিশ সদস্যকে সাসপেন্ড করেন। এছাড়া তেজগাও অপরাধ অঞ্চলের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার আলমগীর কবীর কে প্রধান করে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছেন। আর ডিএমপি হেডকোয়ার্টার এর এক শক্ত খুটির জোরে এখনও বহাল তবিয়তে আছেন ওসি ইফতেখার।