পাগলা মসজিদের দানবাক্সের টাকা সোয়া ৩ কোটি ছাড়িয়েছে

কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে মিলেছে ২৩ বস্তা টাকা, বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় দানবাক্সগুলো খোলে হয়। গণনার কাজ ৮টার পরেই শুরু হয়। দানবাক্স থেকে পাওয়া ২৩ বস্তার টাকা গণনা চলছে। এরইমধ্যে ৩ কোটি ২৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: বিজিবির হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হলো আহত হাতির চিকিৎসায় গিয়ে গুরুতর আহত ২ চিকিৎসকসহ ৩ জনকে
তিনি বলেন, দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। মসজিদের অ্যাকাউন্টে জমা করার জন্য টাকাগুলো রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখায় পাঠানো হয়েছে। এখনো চলছে গণনার কাজ। ২২০ জনের একটি দল গণনার কাজ করছে।
এর আগে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এবং কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতে মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়। এসব বক্সে পাওয়া ২৩ বস্তা টাকা মসজিদে দোতলায় আনা হয় গণনার জন্য।
আরও পড়ুন: ভোলাগঞ্জে শত কোটি টাকার পাথর লুট: পাঁচজন আটক
ধারণা করা হচ্ছে, আগের সব রেকর্ড ভেঙে এবার টাকা প্রাপ্তির নতুন রেকর্ড হবে। এছাড়া দানবাক্সে বৈদেশিক মুদ্রাসহ স্বর্ণালঙ্কারও পাওয়া গেছে।
চলতি বছরের ১৯ আগস্ট মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ২৩ বস্তায় রেকর্ড ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া গিয়েছিল।
এর আগে ৬ মে রমজানের কারণে চার মাস পর দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ১৯টি বস্তায় রেকর্ড ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া যায়। এছাড়া চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ৩ মাস ১ দিন পর দানবাক্স খুলে ২০টি বস্তায় ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া যায়।
মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদে আটটি দানবাক্স থাকলেও এবার আরও একটি দানবাক্স বাড়ানো হয়েছে। দানের পরিমাণ বাড়ায় এখন পাগলা মসজিদের দানবাক্সের সংখ্যা ৯টি।
মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়। এছাড়া করোনাকালে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককেও অনুদান দেওয়া হয়েছিল এ দানের টাকা থেকে।
জানা যায়, মসজিদটিকে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। যার নামকরণ হবে ‘পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স’। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। সেখানে ৩০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।