ময়মনসিংহে বাংলাদেশ-ভারত ব্যবসা ক্ষেত্র সম্প্রসারণে দুই দেশের ব্যবসায়িদের মতবিনিময়

বাংলাদেশ-ভারত ব্যবসার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ ও বিভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে দুই দেশের ব্যবসায়িদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় দুই দেশের ব্যবসার প্রতিকন্ধকতা দূর করে পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষার মাধ্যমে সর্ম্পক উন্নয়নের
নানান দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: ৪০ কেজি গাঁজাসহ বরখাস্ত পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার
শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর জেলা পরিষদের শহীদ আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে দুই দেশের ব্যবসায়িদের অংশ গ্রহনে এই মতবিনিময় সভা
অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক সূত্র জানায়, ট্রাক্স বেশি নেওয়ার অজুহাতে বিগত প্রায় দুই বছর ধরে ভারতে থেকে পাথর এবং ভারতীয় হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিগত
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে যৌথ টহল, নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশ ও সেনাবাহিনী একসাথে মাঠে
প্রায় ৪ থেকে ৫ বছর ধরে কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। মূলত এসব কারণেই দুই দেশের সর্ম্পক উন্নয়নের মাধ্যমে ব্যবসার ক্ষেত্র সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এই
মতবিনিময় সভা আহবান করা হয়েছে। দি ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এবং বাংলাদেশ এসিসট্যান্ট হাই কমিশনার গোয়াহাটির যৌথ আয়োজনে এই সভায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে দি ময়মনসিংহ চেম্বার অব
কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি মো: আমিনুল হক শামীমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক সায়েম। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ
সদস্য মাহমুদুল হক সায়েম ভারতীয় ব্যবসায়িদের উদ্দেশ্যে বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা যখন অসহায় ছিলাম, তখন আপনারা (ভারতীয়রা) আমাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। ভারতীয়রা আমাদের যা দিয়েছে, সে ঋণ সুদ করার নয়। আমরা
আমাদের পূবপুরুষের বন্ধত্বের সর্ম্পক বজায়ে রাখতে চাই। কিন্তু বর্তমানে হালুয়াঘাটে দুইশত ব্যবসায়ি আছে। যাদের বাড়ী, ব্যবসা ও জমি ব্যাংকের
কাছে মরগেজ দেওয়া। তাদের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারের মামলা চলছে। আজ তারা নিঃস্ব। আপনারা বৃহৎ রাষ্ট্রের অংশিদার আর আমরা ছোট রাষ্ট্রের অংশিদার। আমাদের সমস্ত গা-জুড়ে আছেন আপনারা। কিন্তু আমরা যেন আবার বিপদে না পড়ি। আপনারা যা নিতে চান আমরা দিব, আমরা যা চাই আপনারাও দিবেন।
সাংসদ মাহমুদুল হক সায়েম আরও বলেন, ইন্দুনেশিয়া থেকে কয়লা এনে যদি লাভ হয় তাহলে মেঘালয়ের কয়লা কেন লাভ হবে না। বাংলাদেশের রাজধানীর সবচেয়ের কাছের বন্দর হালুয়াঘাট। প্রায় ৬৭ কোটে টাকা ব্যায় করে এই
বন্দরের দুই পোর্ট চালু করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ইমিগ্রেশন চালু করার বিষয়টি মাথায় রেখে বর্তমান সরকার ইতোমধ্যে হালুয়াঘাটের সাথে চারলেন সড়কের কাজের মাপঝোপ করছে।
এ সময় সভাপতির বক্তব্যে দি ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি মো: আমিনুল হক শামীম বলেন, হালুয়াঘাট বন্দরটি এক সময়
প্রাণচাঞ্চল ছিল। তখন এই বন্দরটি অন্যান্য বন্দরের সাথে প্রতিযোগীতা করত। কিন্তু এখন আমরা কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছি। আমাদের শিল্পাঞ্চলগুলো যশোর থেকে ইনপুট করি। অথচ মেঘালয় ও শিলিগুড়ির দূরত্ব মাত্র দুই থেকে তিন
ঘন্টা। এখানে পাথর, কয়লা, মসলা, গাড়ীর পার্টসসহ অনেক পন্য আছে রপ্তানি করার মত এবং বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার মত বিশ^মানের প্লাস্টিক সামগ্রী, সিমেন্ট, মাছ ও ইলেক্টনিক্স পন্য আছে। এতে সুলভমূল্যে ব্যবসার সুযোগ
রয়েছে। সবার সহযোগীতা থাকলে হালুয়াঘাট বন্দরসহ বিভাগের অন্যান্য বন্দরগুলোও দেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে বলে বিশ^াস করি। আপনারা যদি সিরিয়াসলি ব্যবসা করতে চান, লাভবান হতে চান। তাহলে দুই ডলার
কমিশন কিংবা আমি ভিডার বলে আমাকে কমিশন দিয়ে ইনপোর্ট করতে হবে না। এক্ষেত্রে ভারতে সমস্যা বেশি। আমরা এলসি খুলে বসে থাকি কিন্তু মাল আসে না। এতে অনেক ইনপুটার আজ নিঃস্ব, জমিজমা বিক্রি করে বন্ধক দিয়ে সবাই এলসি খুলেছে যাতে সবাই মাল পায়। কিন্তু ইটখলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাল আর বিক্রি করতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, হালুয়াঘাটে ইমেগ্রেশনের ৮০ ভাগ অগ্রগতি হয়ে আছে। উদ্যোগ নিয়ে চালু করলে অনেক
সমস্যা সামাধান হয়ে যাবে। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা কয়লা-পাথর আমদানির উদ্যোগ নিন, ব্যবসায়িরা লাভবান হবে। এতে আয়ের উৎস এবং কর্মক্ষেত্র বাড়বে।’ এর আগে দি ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সহসভাপতি শংকর সাহার সঞ্চালনায় সভার উদ্বোধক হিসাবে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু। পরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এসিসট্যান্ট হাইকমিশন গোয়াহাটির ট্রেড এন্ড প্রটোকল অফিসার
আজহারুল আলম। সভায় বাংলাদেশ ও ভারতের শতাধিক ব্যবসায়ি মতবিনিময় সভায় অংশ গ্রহন করেন।