চাহিদার অর্ধেকও বিদ্যুৎ পাচ্ছে না সিলেট

সিলেটে বিদ্যুৎ বিপর্যয়! ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং

Abid Rayhan Jaki
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:৪৬ অপরাহ্ন, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ৪:১১ অপরাহ্ন, ১৫ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

সিলেটে গত কয়েকদিনে বইছে মৃদু তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ এর কোটায় উঠানামা করছে। ভ্যাপসা গরমে সর্বত্র ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। ঘরে বাইরে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে দিন পার করছেন সিলেটের মানুষ। এ অবস্থায় সিলেট জুড়ে চলছে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা। ঘন্টায় ঘন্টায় চলছে লোডশেডিং এবং দিনে রাতে মিলে চাহিদার অর্ধেকেরও কম বিদ্যুৎ পাচ্ছে না সিলেট। ভাদ্রের খরতাপে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ব্যবসা- বাণিজ্যেও। গরমের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে অনেকেই বিকেলের দিকে দোকান লাগিয়ে চলে যান। এমনকি যেসব ফেরিওয়ালা গরমের শরবত বিক্রি করেন তারা অসহ্য গরমে বিক্রি বন্ধ করে চলে যান।

এ ব্যাপারে সিলেট বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মুহাম্মদ আবদুল কাদের জানিয়েছেন, চাহিদার তুলনায় সিলেট অর্ধেকও বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। গ্রাহকদের শত শত ফোন আমাদেরকে প্রতিনিয়ত বিব্রত করে রাখলেও আমাদের কিছু করার থাকে না।

আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীর অভিযানে খাগড়াছড়িতে অস্ত্রগুলি সহ আটক ১

বিদ্যুতের লোড ম্যানেজমেন্ট আমাদের হাতে নেই। দীর্ঘদিন ধরে আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়টা বুঝানোর চেষ্টা করছি। আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে অবগতও করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। অথচ এই লোডশেডিংয়ে আমাদের কোনো হাত নেই।

তিনি জানান, গত সপ্তাহে সিলেটে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল গড়ে ১৭৫ মেগাওয়াট। সরবরাহ পাওয়া গেছে ৬৩ থেকে ৭৩ মেগাওয়াট এর মতো। পিডিব সূত্রে আরও জানা যায়, রোববার সিলেট অঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ২০৭ দশমিক ৮০ মেগাওয়াট। কিন্তু বিদুৎ সরবরাহ মিলেছে ১৪০ দশমিক ৪৪ মেগাওয়াট। এতে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছিল ৬৭ দশমিক ৩৫ মেগাওয়াট বা ৩২ দশমিক ৪২ শতাংশ। অন্যদিকে সিলেট জেলায় ১৫৩ দশমিক ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ মিলেছে ৯৮ দশমিক ১২ মেগাওয়াট। এতে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছির ৫৫ দশমিক ২ মেগাওয়াট বা ৩৫ দশমিক ৯২ শতাংশ।

আরও পড়ুন: মাধবপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা গ্রেফতা, ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার

এদিকে সিলেটের বিবিয়ানা ও কুমারগাঁওসহ  সবকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন জাতীয় গ্রীডে প্রায় ২২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যাচ্ছে বলে জানিয়েছে পিডিবির একটি দায়িত্বশীল সূত্র। গরম বেড়ে গেলে সরবরাহ মারাত্মক কমে যায় সিলেটে। গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং বাড়লেও সহসা এ থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা কম বলে জানান পিডিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা।

সিলেটে চাহিদার তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ সরবরাহ ঘন ঘন লোডশেডিং নিয়ে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন এর সিলেটের সভাপতি, সিলেট চেম্বারের সাবেক প্রশাসক ফারুক মাহমুদ চৌধুরী।  তিনি বলেন, সিলেট থেকে জাতীয় গ্রীডে ২২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যাচ্ছে অথচ আমাদের চাহিদা পৌনে দুশো থেকে সোয়া দুইশো মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমরা পাচ্ছি না। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য ছাড়া কিছুই নয়। 

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিলেটের উপর দিয়ে কখনো মৃদু আবার কখনো মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। পুরোমাত্রায় তাপপ্রবাহ গ্রাস করেছে গোটা জনপদে। আগামী আরও দুইদিন এই অবস্থা বিরাজ করতে পারে বলে তারা জানায়।