লাকসামে নানান কাজে নারী শ্রমিকদের এখন কদর বাড়ছে

Any Akter
কুমিল্লা সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১:১৭ অপরাহ্ন, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ৪:৩২ পূর্বাহ্ন, ১৬ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চলের পৌর এলাকাসহ উপজেলাগুলো জুড়ে সরকারি-বেসরকারি কিংবা পারিবারিক ভাবে নানান কাজে নারী শ্রমিকদের কদর এখন প্রতিনিয়ত সকল মহলের মাঝে বেড়েই চলেছে।  জেলা দক্ষিনাঞ্চলের উপজেলা গুলোর একাধিক সূত্র জানায়, সংসার জীবনে অভাব অনটন ঘিরে আজ বাধ্য হচ্ছে পুরুষদের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও নানান কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। অভাবের তাড়োনায় মান-সম্মান পর্দার অন্তরালে রেখে সরকারি-বেসরকারি কিংবা পারিবারিক নানান কাজে নিত্যদিনে ভাড়া খেটে অর্থ আয়ে সংসারকে সহযোগিতা করছে তারা। নগদ পারিশ্রমিক পেয়ে কর্মক্ষেত্রে আনন্দ-উল্লাসে কাজ করছে নারী শ্রমিকরা। প্রতিদিন ৪/৫ ঘন্টা কাজ করে তারা ৩’শ টাকা থেকে ৫’শ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন। 

নারী শ্রমিকদের একাধিক সূত্র জানায়, কাজ না করে ঘরে বসে থেকে লাভ কি? স্বামী-সন্তান ছাড়াতো আর কেউ আর্থিক সহযোগিতা করবে না। তাই যখন যে কাজ পাই তখন সে কাজেই করি। এতে সংসারের সহযোগিতা হয়। যেমন সড়ক বাঁধা, কাঁচা রাস্তা সংস্কার, ধান ক্ষেতের আইল বাঁধা, বীজতলা নির্মাণ, জানালা উঠানো, বীজ রোপন, জমির জঙ্গল বাছা, বাসায় ঝিয়ের কাজসহ নানান কাজ করতে আমাদের কোন অসুবিধাই হচ্ছে না। বরং মাস শেষে কিংবা প্রতিদিন নগদ টাকা পেয়ে আনন্দ উপভোগ করছি। উল্লেখ্য অনেক নারী গার্মেন্টসসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে চাকুরী ছাড়াও বিভিন্ন খাবার দোকানগুলোতে কাজ করে যাচ্ছেন। 

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেত্রকোণায় যুবদলের মিলাদ মাহফিল

স্থানীয় কৃষকদের একাধিক সূত্র জানায়, শত বছরের ঐতিহ্য ভেঙ্গে এ অঞ্চলের নারী শ্রমিকরা এখন নানান কাজে এগিয়ে আসছেন। তাদের সরব উপস্থিতি এবং পুরুষদের চাইতে নারী শ্রমিকরা ভালো কাজ করায় মালিকরাও এতে খুশি। নারী শ্রমিকদের এমন কাজ দেখে হতবাক এ অঞ্চলের মানুষ। নারীরা তাদের সামাজিক ও ধর্মীয় প্রথা ভেঙ্গে পুরুষ শ্রমিকদের সাথে সমান তালে তাল মিলিয়ে সকল সেক্টরে নানান কাজ করে যাচ্ছেন। আবার নারী শ্রমিকদের এমন অভুতপূর্ব কাজকে স্বাগত জানাচ্ছেন পুরুষ শ্রমিকরা। তবে সমান তালে কাজ করেও নারী শ্রমিকরা অনেক ক্ষেত্রে মুজুরি পাচ্ছেন পুরুষ শ্রমিকদের অর্ধেক। এ বৈষম্য পরিহারের জন্য নারী শ্রমিকরা মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন।

সূত্রগুলো আরও জানায়, বর্তমান উপজেলাগুলোর হাটবাজার জুড়ে কৃষিপণ্যের দাম ভালো থাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ১০ গুন মূল্য বেশি। ফলে নানান পন্য উৎপাদনে জমি চাষাবাদে নেমেছেন কৃষকরা। পুরুষ শ্রমিক সংকট হওয়ায় এ অঞ্চলের নারী শ্রমিকদের কদর দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে স্বল্প মূল্যে শ্রমিক পেতে এলাকার অসহায় হতদরিদ্র নারী শ্রমিকদের বেছে নিচ্ছেন জমির মালিকরা। 

আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে জাফলং থেকে লুট হওয়া ৭ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার

স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার নারীদের বিধবাভাতা, বয়স্কভাতা, মাতৃকালীন ভাতা প্রকল্পদপ্তর ও এলজিইডির বিভিন্ন কাঁচা-পাকা সড়ক সংস্কার কাজ, মহিলা বিষয়ক দপ্তরের নানামুখী নারী বান্ধব কর্মসূচীসহ নারীদের উন্নয়নে জেলা-উপজেলার সার্বিক প্রশাসন নানাহ উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি পুরুষ শ্রমিকদের সাথে সমান তালে স্বল্প পারিশ্রমিকে নারী শ্রমিকরা নানাহ কাজ করে সাবলম্বী হচ্ছেন। 

এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও নারী শ্রমিকদের কোনো আপডেট তথ্য কিংবা কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।