আওয়ামী দোসরদের নির্যাতনে উপজেলা বিএনপি নেতার সংবাদ সম্মেলন

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসর কর্তৃক ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির তাহিরপুর উপজেলা সদস্য মো. নাছির মিয়া। তিনি মেসার্স তাহিয়া স্টোন ক্রাশার হলহলিয়া, তাহিরপুর, সুনামগঞ্জের সত্ত্বাধিকারী।
তিনি জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও এখনো তাদের দোসররা নানাভাবে সক্রিয়। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমি রাজপথে সক্রিয় একজন কর্মী। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আমলেও জুলুম নির্যাতনের মুখে আমি দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশনায় তৃণমূলে দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছি।
আরও পড়ুন: মাধবপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা গ্রেফতা, ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার
তিনি জানান, সুনামগঞ্জের যাদুকাটা বালুমহালের উপর নির্ভরশীল অন্তত ৫০ হাজার শ্রমিক। আওয়ামী দোসরদের ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। এলাকার ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। আমি যাদুকাটা-১ প্রতিযোগিতামূলক ইজারায় অংশগ্রহণ করে ইজারাপ্রাপ্ত হই। পরে এ নিয়ে ইজারা বঞ্চিত আওয়ামী দোসররা মিথ্যা মামলা দিলে সরকার আইনগত মোকাবেলা করে। আমরাও ইজারাপ্রাপ্ত হিসেবে সরকারের কাজে সহযোগিতা করছি।
তিনি জানান, গত (২৫ জুন) ঢাকায় হাইকোর্টে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে আমার প্রাণনাশের চেষ্টা করে আওয়ামী দোসর ও ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনে নির্যাতনের মামলার আসামি যাদুকাটা নদীর সাবেক ইজারাদার ফ্যাসিস্ট মো. রতন মিয়া। তাকে সহযোগিতা করে ফেরদৌস মিয়া ও খোরশেদ মিয়া। তাদেরকে প্রশাসনিকভাবে সবরকম সহযোগিতা করে জামালগঞ্জের বাসিন্দা ও ঢাকায় বসবাসরত মাহবুবুর রহমান। ওইদিন কাজ শেষে রিক্সাযোগে হোটেলে আসার সময় সেগুন বাগিচা দুদুক কার্যালয়ের সামনে কয়েকজন ডিবিকে ডেকে এনে আমাকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী নেতা সাজিয়ে জোর করে রিক্সা থেকে নামিয়ে মারধর করে। পরে আমাকে মিন্টু রোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যাদুকাটা নদীর ইজারা নেওয়ায় নির্যাতন করে। প্রসঙ্গত খোরশেদ, ফেরদৌস ও রতনও তাদের লোকদের মাধ্যমে মহাল ইজারা নিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়ায় তারা ইজারা বঞ্চিত হয়। এরপর থেকে আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে তারা। তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা করছেন মাহবুবুর রহমান। আমাকে নির্যাতন করে থামিয়ে দিতে ডিবিকে দিয়ে পরিকল্পনা করেন মাহবুবুর রহমান।
আরও পড়ুন: সাভারে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে উদ্যোগ নিলেন ইউএনও
তিনি জানান, আমি যোগাযোগ না করলেও ডিবি মিন্টু রোডের কার্যালয়ে নিয়ে নির্যাতনের সময় ছুটে আসেন মাহবুবুর রহমান। ডিবি অফিসে মাহবুব ১০ লাখ টাকা চায় আমাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য। ডিবির কতিপয় অসৎ সদস্যকে প্রভাবিত করে মাহবুবুর রহমান আমার ৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরে আমাকে মারধর করে তাদের সাজানো মুচলেকায় জোরপূর্বক স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেয়। তাদের কবল থেকে বেড়িয়ে আমি চিকিৎসা নেই এবং এলাকার আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের বিষয়টি অবগত করে আজ আমার উপর অন্যায় নির্যাতনকারী আওয়ামী দোসরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও মিথ্যা মুচলেকা ফিরিয়ে দিতে দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নাছির মিয়ার পিতা আক্তার আলী, চাচা আকবর আলী, ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমদ প্রমূখ। এদিকে যাদুকাটা (১) এর ইজারাদার নাছির উদ্দীন সংবাদ সম্মেলন করার পর যাদুকাটা (২) এর সর্বোচ্চ দরদাতা ইজারাদার শাহ রুবেল আহমেদও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানমালের নিরাপত্তার বিষয়ে আতংকে রয়েছেন। তিনি জেলা প্রশাসন সহ আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।