অগ্নিসংযোগে উত্তপ্ত তারাপুর

মসজিদের বারান্দা নির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩০

Sadek Ali
গোলাম ফারুক, পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, ২৭ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, ২৭ জুলাই ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

পাবনার বেড়া উপজেলায় মসজিদের বারান্দা নির্মাণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত মো. হাদিস (৪০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। 

শনিবার (২৬ জুলাই) বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছানোর পর ফের ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুপক্ষ। দুপুরের দিকে উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামে এই সংঘর্ষে অন্তত পনেরো থেকে বিশটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।

আরও পড়ুন: ৪০ কেজি গাঁজাসহ বরখাস্ত পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাদিস নতুন মসজিদের পক্ষের সমর্থক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর উত্তেজিত লোকজন প্রতিপক্ষের (পুরোনো মসজিদের সমর্থকদের) তিন-চারটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন এবং কয়েকটি বাড়িতে ব্যাপক লুটপাট চালান। খবর পেয়ে বেড়া মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, অগ্নিসংযোগের পরপরই ফায়ার সার্ভিসে ফোন করা হলে তাঁদের টিএন্ডটি ও মুঠোফোন নম্বর দুটিই বন্ধ পাওয়া যায়। আগুন লাগার প্রায় ৪৫ মিনিট পরও ঘটনাস্থলে পৌঁছাননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফায়ার সার্ভিসের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে যৌথ টহল, নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশ ও সেনাবাহিনী একসাথে মাঠে

বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওলিউর রহমান বলেন, “গতকালের ঘটনায় আহত একজনের মৃত্যুর পর গ্রামে ফের সহিংসতা ছড়ায়। অন্তত পনেরোটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমি নিজে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আছি। বিকেল সোয়া চারটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।”

উল্লেখ্য, পুরনো মসজিদে নামাজ পরবর্তী মিলাদ মাহফিলে কিয়াম পড়া নিয়ে একটি ঝামেলা বাধে। মসজিদের তৎকালীন ক্যাশিয়ার মতিন হাজী সহ একটি পক্ষ কিয়াম পড়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে পুরাতন মসজিদ হতে ১০০ গজের মধ্যে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণ করে। সম্প্রতি এ মসজিদের বারান্দা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। একটি পুরনো মসজিদ ও আরেকটি নতুন মসজিদ নামে পরিচিতি। এর আগের দিন শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে তারাপুর গ্রামে মসজিদের বারান্দা নির্মাণকে কেন্দ্র করে নতুন ও পুরোনো মসজিদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হন, যাঁদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় পাঁচজনকে বগুড়া ও পাবনা পাঠানো হয়।

সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জান্নাতুল নাঈম জানান বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তারাপুর এলাকায় সেনাবাহিনীর, র‍্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন তৎপর রয়েছে।