সুরমা নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধে হরিনাপাটি গ্রামবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন

Sanchoy Biswas
মো. আব্দুল শহীদ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৫:০৩ অপরাহ্ন, ২৪ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১০:৩১ পূর্বাহ্ন, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

সুরমা নদীর ভাঙনে হরিনাপাটি গ্রামটি ক্রমে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গ্রামের চিত্র পাল্টে গেছে। কত শত ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে তার কোনো পরিসংখ্যান গ্রামবাসীর কাছে নেই। ঘরবাড়ি হারিয়ে এখনও খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে অনেক পরিবার। বাড়িঘর হারিয়ে মাথাগুঁজার ঠাঁই পাচ্ছেন না কেউ কেউ। গ্রামজুড়ে এক নীরব তাণ্ডব বিরাজ করছে।

ভাঙন আতঙ্কে গ্রামবাসীর রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার ঘরদোর নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। তাই গ্রামবাসী বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন। আবেদন-নিবেদন ও একাধিক মানববন্ধন করে ভাঙন প্রতিরোধের আশায় তীর্থের কাকের মতো পথপানে চেয়ে আছেন। কবে সুদিন আসবে আর প্রশাসনের উদ্যোগে ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে— সেই অপেক্ষায় দিন গুনছেন তারা।

আরও পড়ুন: অমানবিক পুশইনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করলো বিজিবি

এরই ধারাবাহিকতায় ভাঙন রোধে ৭ম বারের মতো মানববন্ধন করেছেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ২নং রঙ্গারচর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হরিনাপাটি গ্রামবাসী। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বাদ জুমা সুরমা নদীর তীরে বিশাল মানববন্ধনে আওয়াজ তোলেন গ্রামবাসী।

সাবেক ইউপি সদস্য মো. আব্দুল খালিকের সভাপতিত্বে এবং বিশিষ্ট সমাজসেবী ফাহিমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আলহাজ আছদ্দর আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল খালিক, মো. আযর আলী, মো. আহাদ আলী, শাবাজ মিয়া প্রমুখ।

আরও পড়ুন: জামালপুরের আলোচিত মনিরুল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার

বক্তারা বলেন, বিগত বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে আমরা স্থানীয় প্রশাসন, বিশেষ করে জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ পাউবো’র মহাপরিচালক ঢাকা বরাবর আবেদন-নিবেদন করে আসছি এবং মানববন্ধন করছি। আমাদের সঙ্গে আশপাশ এলাকার যারা আবেদন-নিবেদন করেছে, তাদের নদীভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন— কিন্তু বাদ পড়েছি আমরা।

আমাদের নদীভাঙনে শুধু কিছু সংখ্যক জিও ব্যাগ ভাঙনের আংশিক এলাকায় ফেলা হয়েছে, এর বেশি কিছু হয়নি। এতে আমরা হতাশ। আমরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে দাবি করছি— আমাদের ঐতিহ্যবাহী গ্রামের প্রাচীনতম নিদর্শন, বাপ-দাদার আমলের বড় মসজিদ, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মক্তব, বাজার, এলজিইডি সড়ক এখন হুমকির মুখে। খাই খাই অবস্থায় ভাঙন এগুচ্ছে। যে কোনো সময় নদী গ্রাস করতে পারে এসব স্থাপনা।

তাই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে আমাদের প্রাণের দাবি— জরুরি ভিত্তিতে সরেজমিন সার্ভে করে ভাঙনের স্থায়ী ব্যবস্থায় ব্লক বসিয়ে প্রতিরোধের উদ্যোগ নেওয়া হোক।