ফুলকপির কেজি ২ টাকা, লোকসান গুনছেন কৃষক

Sadek Ali
সানোয়ার হোসেন, বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২:৩১ অপরাহ্ন, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৪:৩৮ অপরাহ্ন, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সর্ববৃহৎ কাঁচা-শাক সবজির পাইকারি ফুলবাড়ি বাজার শীতকালীন সবজিতে ভরপুর। পুরো হাটজুড়ে সবুজ শাক সবজিতে ঠাঁসা। সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা ভালো দামের আশায় তাদের উৎপাদিত সবজি বিভিন্ন যানবাহনে করে এই হাটে আনেন। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ও থাকে অনেক বেশি। পুরো উপজেলার সকল সবজি বিক্রেতা এই সবজি হাট থেকে পাইকারিতে সবজি কিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজারে বিক্রি করেন। কিন্তু, হাটে কাঙ্ক্ষিত দাম না থাকায় শীতকালীন সবজি ফুলকপির দামে ধস নামায় কৃষকরা লোকসান গুণছেন। চাহিদার তুলনায় প্রচুর আমদানি, ক্রেতা সংকট ও মজুতের সুবিধা না থাকায় বাধ্য হয়ে টাটকা শাকসবজি কম দামে বিক্রি করছেন। এতে উৎপাদন খরচ না ওঠায় কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গাড়িদহ, খামারকান্দি, মির্জাপুর, খানপুর ইউনিয়নে শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজির পাশাপাশি ফুলকপি চাষ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে মাচায় লাউ চাষ করে লাভবান কৃষক

রবিবার (২১ ডিসেম্বর) উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নের ফুলবাড়ি পাইকারি সবজি বাজারে প্রতি মন (৪০ কেজি) ফুলকপি বেচা কেনা হয় ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জমি থেকে পাইকারি পর্যায়ে এক কেজি ফুলকপি দুই টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা। অথচ একটি ফুলকপি চাষ করতে তাদের কেজিপ্রতি খরচ হয়েছে অন্তত পাঁচ টাকা থেকে সাত টাকা। চড়া দামে সার, বীজ, কীটনাশক কিনে তারা সবজি চাষ করেছেন। অথচ দুই সপ্তাহ ধরে শীতকালীন সব সবজির দামে ধস নেমেছে। এতে কম দামে সবজি বিক্রি করে উৎপাদন খরচই উঠছে না চাষিদের। এতে পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা হওয়ার উপক্রম।

আরও পড়ুন: ব্রি’র ১২১টি ধানের জাত উদ্ভাবন

বাজারে আগত কৃষক রফিকুল জানান, গত এক মাস আগে ফুলকপির বাজার ছিল ২ হাজার টাকা থেকে ২৫শ টাকা মন। ১৫ দিন আগে ছিল ১ হাজার টাকা থেকে ১২শ’ টাকা মন গত এক সপ্তাহ আগে বাজার দর ছিল ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা মন। গত তিন দিন ধরে ফুলকপি বেচা কেনা হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা মন দরে।

হঠাৎ করে বাজার দর কমে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ মজুরি খরচ ও বাজারে আনতে পরিবহন খরচও তোলা যাচ্ছে না। এ রকম বাজার দর থাকলে কৃষক ফুলকপি বিক্রি করে অর্থনৈতিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

বাজারে আগত পাইকার কারিমুল জানান, গত কয়েক দিন ফুলকপি চাহিদার তুলনায় বাজারে আমদানি বেশি হয়েছে আর সেই কারণেই বাজারে ফুলকপির দাম কমে গেছে।

উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জুলফিকার হায়দার বলেন, এ বছর উপজেলায় সবজির ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে সবজির কোনো ঘাটতি নেই। চাহিদার তুলনায় বেশি উৎপাদনের কারণে বাজারে সবজির দাম কিছুটা কম।