হাদির হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক কবির, জানা গেল নতুন তথ্য

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৩০ অপরাহ্ন, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:৩৬ অপরাহ্ন, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিকানা নিয়ে নতুন তথ্য সামনে এসেছে। মামলায় গ্রেপ্তার মো. কবিরই ওই মোটরসাইকেলের মালিক—এমন দাবি করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে কবিরের রিমান্ড শুনানিতে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

এর আগে এই মামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক দাবি করে মো. আব্দুল হান্নান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেয়। গত রোববার রিমান্ড শুনানিতে হান্নান দাবি করেন, মোটরসাইকেলটি তাঁর নয়। আটকের পর তিনি র‌্যাব ও পরে পুলিশকে তাঁকে সংশ্লিষ্ট শোরুমে নিয়ে যেতে বললেও কেউ তাঁর কথা শোনেনি বলে অভিযোগ করেন।

আরও পড়ুন: হঠাৎ আইজিপি অপসারণ আন্দোলনে উস্কানিদাতা কারা

হান্নান আদালতে বলেন, মোটরসাইকেলটি তিনি মিরপুর মাজার রোডের একটি শোরুম থেকে কিনেছিলেন। তবে হাতে সমস্যা থাকায় সেটি চালাতে না পেরে পরে একই শোরুমে বিক্রি করে দেন। দুই মাস আগে মালিকানা পরিবর্তনের জন্য শোরুম থেকে ফোন করা হলেও অসুস্থতার কারণে তিনি সেখানে যেতে পারেননি।

এদিকে আজ মো. কবিরের রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল জোনাল টিমের পরিদর্শক ফয়সাল আহম্মেদ আদালতে বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কবির ও প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সল করিম মাসুদসহ অন্যরা ৫ ডিসেম্বর বাংলামোটরে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়েছিলেন। পাশাপাশি হান্নানের বিক্রি করা মোটরসাইকেলের প্রকৃত মালিক কবির।

আরও পড়ুন: সন্ত্রাস দমন আইনের মামলায় সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আদালতে প্রেরণ

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. কাইয়ুম হোসেন বলেন, মোটরসাইকেলযোগে গিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাঁর অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। কবির ঢাকার আদাবর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক এবং প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সল করিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। ঘটনার সঙ্গে আর কারা জড়িত, তা জানতে কবিরকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

আদালতে কবিরের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। বিচারকের প্রশ্নে কবির বলেন, তিনি ফয়সল করিমের মোটরসাইকেলে ট্রিপ ও পাঠাও চালাতেন। ফয়সল ফোন করলে তিনি যেতেন। ১৮ দিন আগে ফয়সল তাঁকে জানান, তিনি ওসমান হাদির সঙ্গে ব্যবসা করেন এবং তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করেন। অনিচ্ছা সত্ত্বেও তিনি ফয়সলের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেন কবির।

মোটরসাইকেলের মালিকানা সম্পর্কে কবির বলেন, মোটরসাইকেলটি তাঁর এক বন্ধুর। তিনি ও তাঁর বন্ধু একসঙ্গে মোটরসাইকেল কিনতে গেলে বন্ধুটি তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে সেটি কেনেন। বন্ধুর নাম মাইনুদ্দিন ইসলাম শুভ বলে আদালতে উল্লেখ করেন কবির। শুনানি শেষে আদালত কবিরের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার মতিঝিল এলাকায় নির্বাচনী প্রচার শেষে ফেরার পথে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে মোটরসাইকেল থেকে গুলি করা হয় ওসমান হাদিকে। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছে।