জরুরি অবস্থা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করার বিষয়ে একমত রাজনৈতিক দলগুলো: জাতীয় ঐকমত্য কমিশন

জরুরি অবস্থা যেন কোনোভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না হয়—এ বিষয়ে একমত হয়েছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আয়োজনে দ্বিতীয় পর্যায়ের ১০ম দিনের আলোচনায় এ বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
সোমবার (৭ জুলাই) ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, “জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়টি সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদে রয়েছে। এই অনুচ্ছেদের (ক), (খ), (গ) ধারা সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন ও পরিমার্জনের বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। একইসঙ্গে রাজনৈতিকভাবে এর অপব্যবহার যেন না হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে চায় সবাই।”
আরও পড়ুন: নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে বিদায় নেবো: ধর্ম উপদেষ্টা
এদিন আলোচনা হয় উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালত সম্প্রসারণ নিয়েও। অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো এই প্রস্তাবে একমত হয়েছে, তবে কিছু শর্ত ও সুপারিশ সামনে এনেছে।
এই সুপারিশগুলো হলো:
আরও পড়ুন: বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকাশ করা হয়নি উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদের হিসাব
- সদর উপজেলার আদালতকে জেলা জজ কোর্টের সঙ্গে সংযুক্ত রাখতে হবে
- বিদ্যমান চৌকি আদালত ও দ্বীপাঞ্চলের আদালত বহাল রাখতে হবে
- জনসংখ্যার ঘনত্ব, ভৌগোলিক অবস্থান, মামলার পরিমাণ ও যোগাযোগব্যবস্থা বিবেচনায় নতুন আদালত স্থাপন করতে হবে
- স্থানীয় সরকার পর্যায়ে আইনগত সহায়তা কার্যক্রম সম্প্রসারিত করতে হবে
- নতুন আদালত স্থাপনে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে
তিনি আরও বলেন, “জেলা সদরের কাছাকাছি কোনো উপজেলায় নতুন আদালত স্থাপনের দরকার নেই। এই বিষয়ে একটি জরিপ পরিচালনা করে তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয় বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দল।
ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানায়, জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে আগামী সভাগুলোতে আরও বিস্তারিত আলোচনা হবে এবং পরে একটি চূড়ান্ত সুপারিশ পেশ করা হবে।