জামালপুর দড়িপাড়া দি রেনেসাঁ হাসপাতালে ডাক্তার কর্তৃক নার্স ধর্ষণের চেষ্টা

AK Azad
জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৬:৩১ অপরাহ্ন, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫ | আপডেট: ৪:৩২ পূর্বাহ্ন, ১৬ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

জামালপুর শহরের দড়িপাড়া বাইপাস" সড়কে অবস্থিত দি রেনেসাঁ হাসপাতালে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ঐ হাসপাতালের নার্স ধর্ষণ অপচেষ্টা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রেরণ করেছেন পুলিশসহ জেলা সিভিল সার্জনের কাছে ভুক্তভোগী নার্স। এ ঘটনায় গত ২৩ জানুয়ারি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সদর থানার পুলিশ।

ভুক্তভোগী নার্সের অভিযোগ গত ২৯ ডিসেম্বর প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ও ল্যাপারোস্কোপিক সার্জন ডাঃ মোঃ শাহাদত হোসেন তাকে একা পেয়ে দস্তা দস্তি শুরু করে এক পর্যায়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। তাৎক্ষণিক সে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বিচার দাবি করেন। কিন্তু হাসপাতাল কতৃপক্ষ  আইনগত ব্যবস্থা না নিতে নিষেধ করে তারা বিচারের নামে কালক্ষেপণ করে যাচ্ছেন। তাই দীর্ঘদিন অতিবাহিতের পর বাধ্য হয়ে সুবিচার না পেয়ে জেলা পুলিশ সার্জন কার্যালয়ে এবং পুলিশের কাছে  এ সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছি বলে জানান ভুক্তভোগী নার্স। অসহায় ভুক্তভোগীর আরো অভিযোগ করে বলেন অভিযুক্ত ডাক্তারের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো  ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং আমাকে চাকরি চ্যুতির হুমকি দিচ্ছেন। জামালপুর সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানাযায় দি রেনেসাঁ হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা: শাহাদত হোসেন এর নিবন্ধনকৃত চিকিৎসক সনদ বাতিল করাসহ ঐ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নার্স মুন্নি একটি আবেদন করেছেন।

অপরদিকে ২৯ জানুয়ারি বুধবারে দি রেনেসাঁ হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় হাসপাতালটিতে রিসিপশনিস্ট এবং চিকিৎসক নেই। রোগীরা কার ডাকা ভোর থেকে ডাক্তারদের জন্য দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন কিন্তু কোন চিকিৎসকে খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। পরে চিকিৎসকের ভিজিটিং কার্ড  মাধ্যমে জানা যায়, প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ও ল্যাপারোস্কোপিক সার্জন ডাঃ মোঃ শাহাদত হোসেন। তিনি এমবিবিএস,এমসিপিএস, গাইনী এন্ড অবস্ বর্তমানে তিনি মমিনসিংহ মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল কর্মরত আছেন। প্রতি সপ্তাহে  তিনি শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত দি রেনেসাঁ হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখেন। অভিযুক্ত চিকিৎসক ডাক্তার শাহাদাত হোসেনের মুঠোফোনে হাসপাতালের নার্স  ধর্ষণের অপচেষ্টা ও শ্রীলতাহানি ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন মুন্নি কোন প্রশিক্ষিত নার্স না। তাই অপারেশন থিয়েটার (ওটিতে)  একটা চাইলে আর একটা দেয়। এজন্য রাগ করে একটি থাপ্পর দিয়েছি মাত্র। প্রশিক্ষিত নার্স ছাড়া ওটিতে কিংবা হাসপাতালে রোগী চিকিৎসা কিভাবে করাচ্ছেন জানতে চাইলে তার কোন সদ উত্তর দিতে পারেননি তিনি। তবে এ বিষয়ে তিনি বলেন এটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী আমি নই।
 
নার্স ধর্ষণের চেষ্টা ও শ্রীলতাহানির বিষয়ে হাসপাতাল মালিক ডাক্তার এ কে আজাদ এর কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি একটু দূরে আছি। হাসপাতালে কর্মরত আব্দুল জলিল আছে তার সাথে যোগাযোগ করুন।

আব্দুল জলিলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানায় হাসপাতালের লাইসেন্স নং HSM 4314548 ,প্যাথলজি লাইসেন্স নং HSM 4514549। কিন্তু হাসপাতালে লাইসেন্স নবায়ন আছে কিনা এবং  পরিবেশ অধিদপ্তর  কোন ছাড়পত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন কাগজপত্র না দেখিয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন ।

অপরদিকে হাসপাতলে চারজন নার্স প্রশিক্ষিত সনদ প্রাপ্ত কিনা এ সংক্রান্ত বিষয় জানতে চাইলে তাদের বৈধ সনদপত্র না দেখিয়ে বলেন তারা প্রত্যেকেই শিক্ষানবীশ নার্স বলে তিনি দাবি করেন। যেখানে মানুষের জীবন নিয়ে খেলা সেখানে প্রশিক্ষিত নার্স ব্যাতিরেখে শুধুমাত্র শিক্ষানবিস নার্স দ্বারা চিকিৎসা দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ কিনা এর কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

এ ব্যাপারে জামালপুর সিভিল সার্জনের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান মুন্নি আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে আমি তার অভিযোগ গ্রহণ করেছি এবং ডাঃ মোঃ শাহাদত হোসেন বিরুদ্ধে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।