সাতক্ষীরায় পানি ফল চাষে কৃষি বিপ্লব, অর্থনীতিতে বইছে নতুন সুবাতাস

Sanchoy Biswas
সৈয়দ আব্দুস সালাম পান্না, সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: ৮:৪৫ অপরাহ্ন, ০৩ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১২:০৫ অপরাহ্ন, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

পানি ফল চাষে এসেছে এক নতুন দিগন্তের সূচনা। সাতক্ষীরা জেলার বিস্তীর্ণ মাঠ এখন ভরে উঠেছে সবুজ পানিফলের বাগানে। একসময় এই ফলটি সীমিত পরিসরে মৌসুমভিত্তিক চাষ হলেও বর্তমানে এর ব্যাপক বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা এখন আগ্রহভরে পানি ফল চাষে ঝুঁকছেন।

কৃষকদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, পানি ফল চাষে খরচ তুলনামূলকভাবে কম হলেও লাভ অনেক বেশি। এক বিঘা জমিতে পানি ফল চাষ করতে খরচ হয় প্রায় ২০ হাজার টাকা, আর বিক্রি করে পাওয়া যায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে কৃষকের মুখে ফিরেছে হাসি, আর পরিবারের সদস্যদের মুখে ফুটেছে আর্থিক স্বচ্ছলতার আনন্দ।

আরও পড়ুন: অমানবিক পুশইনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করলো বিজিবি

জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকে করে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, যশোরসহ দেশের নানা জেলায় পাঠানো হচ্ছে পানি ফল। স্থানীয় চাহিদা পূরণের পরও অব্যাহত রয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ। ফলে সাতক্ষীরার কৃষিপণ্য এখন দেশের বাজারে বিশেষ স্থান করে নিচ্ছে।

বর্তমানে পাইকারি বাজারে পানি ফল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২ থেকে ১৩ টাকায়, আর খুচরা বাজারে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। এই দাম কৃষকদের জন্য লাভজনক, আর ক্রেতাদের জন্যও সহজলভ্য। পুষ্টিতে ভরপুর এই ফলটি যেমন খেতে সুস্বাদু, তেমনি এতে রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

আরও পড়ুন: জামালপুরের আলোচিত মনিরুল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার

পোলারাও উপজেলার মুরালিকাটি গ্রামের পানিফল চাষী আব্দুর রশিদ বলেন, “পানি ফল চাষ এখন আমাদের আশীর্বাদ। যদি কৃষি দপ্তর থেকে আরও প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পরামর্শ পাওয়া যায়, তাহলে সাতক্ষীরায় পানি ফল উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব।”

কৃষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “পানি ফল এখন জেলার অন্যতম সম্ভাবনাময় ফসল। উপযুক্ত আবহাওয়া ও মাটির গুণগত মানের কারণে সাতক্ষীরায় এই ফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি দপ্তরের সহযোগিতা পেলে সাতক্ষীরার অর্থনীতিতে পানি ফল চাষ আরো বেশি বিস্তৃত হবে।”

সাতক্ষীরার গ্রামীণ অর্থনীতিতে পানি ফল চাষ এখন এক নতুন আশার নাম। কৃষকের ঘরে ফিরেছে সমৃদ্ধি, চাষে ফিরেছে আত্মবিশ্বাস, আর জেলার অর্থনীতিতে বইছে নতুন সুবাতাস।