সর্বজনীন রেশনিং পুন:প্রবর্তন জনগণের দাবি

Any Akter
জহিরুল হক শামীম, কলামিষ্ট ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, মাসিক সমাহার
প্রকাশিত: ১:৫৫ অপরাহ্ন, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:১০ পূর্বাহ্ন, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতে মুসলিম শাসনের ৭৬৬ বছরে বাংলা অঞ্চলে কৃষি, বাণিজ্য এবং শিল্পে ঈর্ষণীয়  উন্নতি ঘটে। সেকালে বাংলার সম্পদ বাংলায়-ই থাকত। মুঘল শাসকদের দেশে পাচার হতো না।স্বাধীন সুলতানী আমলে (১২ শতক থেকে ১৬ শতকের মধ্যভাগ) বাংলা অর্থনৈতিকভাবে আরও স্বাবলম্বী হয়।বাংলার মুসলমান সুলতানেরা স্বাধীনতা ঘোষণা করেই নিজের নামে মুদ্রা চালু করতেন । কেননা তৎকালে নিজস্ব মুদ্রা ছিল স্বাধীনতার প্রতীক ।  বাংলায় তখন কৃষি , কুটির শিল্প ও বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটেছিল। সে সময়ে, বাংলা থেকে উন্নতমানের বস্ত্র ও অন্যান্য পণ্য ইউরোপে রপ্তানি হতো। ফলে বাংলা একটি সমৃদ্ধ বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত হয়।ইউরোপীয় বণিকদের মধ্যে পর্তুগিজরা প্রথম বাংলায় আসে  ১৫৩৮ খ্রি. । তারা চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কারখানা ও কাস্টমস ঘরও স্থাপন করে। তারপরে ওলন্দাজরা ।  ৩১ ডিসেম্বর, ১৬০০ খ্রি. রানী এলিজাবেথ বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে প্রাচ্যে বাণিজ্যের রাজকীয় সনদ প্রদান করেন।  ইংরেজরা ১৬০৮ খ্রি. ভারতে প্রথম বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। বহুপরে ১৬৬৪ খ্রি. ফরাসিরা বাংলায় আসে। বৃটিশরা বাণিজ্যের নামে বাংলায় এলেও ১৭৫৭ খ্রি. ২৩ জুন পলাশী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলায় ইংরেজ শাসন কায়েম করে।

কিন্তু ইংরেজ বণিকদের শোষণের ফলে   ১ যুগ পার হতে না হতেই ১১৭৬ সনে বাংলার বুকে নেমে আসে  ভয়াবহ  দুর্ভিক্ষ। যা ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ নামে পরিচিত।  এই মন্বন্তরে মারা যায় প্রায় এক কোটি মানুষ। দুই বাংলার জনসংখ্যার তিনভাগের একভাগ মানুষ শুধু খেতে না পেয়ে মারা যায়। অথচ,দুর্ভিক্ষের  পাঁচ বছর আগে ১৭৬৫ খ্রি. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সাধারণ কৃষক প্রজার খাজনা ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করে।  এর মধ্যে ১৭৬৯ খ্রি.  ভয়াবহ বন্যায় কৃষকের গোলা ফাঁকা হয়ে যায়। শুরু হয় দুর্ভিক্ষ। এমন অবস্থায়ও ইংরেজ  খাজনা তোলা বন্ধ করেনি। উল্টো পরের বছর খাজনা আরও ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ৬০ শতাংশ করা হয়। তাতে কৃষকদের জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি তুলে দিতে হয় ব্রিটিশ বেনিয়াদের কাছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দুর্ভিক্ষের  মাত্র দুই বছর আগে বাংলা ১১৭৪ সনে আদায়কৃত রাজস্বের পরিমাণ ছিল প্রায় দেড় কোটি ৫২ লাখ রুপি। আর  দুর্ভিক্ষের পরের বছর বাংলা  ১১৭৭ সনে আদায়কৃত রাজস্বের পরিমাণ এর চেয়ে ৫ লাখ ২২ হাজার রুপি বেশি ছিল। অথচ তখনও মানুষ না খেতে পেয়ে গণহারে মারা যাচ্ছিল।

আরও পড়ুন: যানজটমুক্ত মহানগর গড়ার জাতীয় রোডম্যাপ: ঢাকাকে বাঁচাতে এখনই প্রয়োজন সাহসী সিদ্ধান্ত

এরপরে ঘটে ’পঞ্চাশের মন্বন্তর’ । সরদার ফজলুল করিম লেখেন, ‘১৯৪৩ সালটি মনে রাখা দরকার। ১৯৪৩ মানেই হচ্ছে বাংলা ১৩৫০। ১৩৫০ সালে হয়েছিল সেই নিদারুণ দুর্ভিক্ষ,  সে সময় এই দুর্ভিক্ষটা আমাদের প্রভাবিত করে। কমিউনিস্ট নেতা পি সি যোশী  বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপরে বই লিখেছিলেন, ‘‘হু লিভস ইফ বেঙ্গল ডাইস’? ব্রিটিশ সরকার তখন জার্মানির সঙ্গে যুদ্ধ নিয়ে ব্যস্ত । সেই মন্বন্তরে  ২০ থেকে ৫০ লাখ মানুষ সে সময় না খেতে পেয়ে মারা যায়। পঞ্চাশের এই ভয়াবহ মন্বন্তর নিয়ে গবেষণা করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন প্রমাণ করেন, ‘ওই সময় যথেষ্ট খাদ্য ছিল। কিন্তু শহরের অর্থনীতি চাঙ্গা হলেও -গ্রামের দরিদ্র লোকদের খাবার কেনার সামর্থ্য ছিল না। ফলে চরম দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় এবং লাখ লাখ লোক মারা যায়।’ সেই সময়ের হাহাকারের চিত্র উঠে  এসেছে  ‘আধুনিক চিত্রকলার জনক’ জয়নুল আবেদিনের আঁকা ছবিতে। 

স্বাধীন বাংলাদেশ প্রথম দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হয় ১৯৭৪ সালে। যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি তখনও কাটিয়ে ওঠেনি। এরমধ্যে ১৯৭৩ সালে অনাবৃষ্টিতে  ধানের উৎপাদন ব্যাহত ও পরের বছর বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।  সেই সংকট আরও ঘনীভূত হয়, ‘কিউবার কাছে বাংলাদেশের পাট বিক্রির সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে। ঢাকায় সাহায্য বন্ধ করে দেয় ওয়াশিংটন। এমনকি খাদ্য নিয়ে দেশটির যে জাহাজ বাংলাদেশের পথে ছিল, তাও ফিরিয়ে নেয়।’ বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তৎকালীন  গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দীনের মতে, ’এই দুর্ভিক্ষ ব্যাপকহারে রূপ নেয়ার প্রধান কারণ ছিল এটি ’। সরকারি হিসেবে চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষে খাবারের অভাবে মারা যায় ২৭ হাজার মানুষ। সরকারকে লঙ্গরখানা খুলতে হয়। অভিযোগ রয়েছে, এছাড়াও দুর্ভিক্ষের কারণ ছিল তৎকালীন  সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি এবং মজুতদার ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফা লাভের প্রবণতা।

আরও পড়ুন: সত্যিকারের স্বাধীনতা দিবসের সন্ধানে

ভারতে মুসলিম শাসনের ৭৬৬ বছরে (৭০০-১৮৫৮) কোন দূর্ভিক্ষ হয়নি।রেশন প্রথা চালুরও প্রয়োজন হয়নি।কিন্তু বৃটিশ শাসনামলের একযুগ পার না হতেই – বাংলা পরপর দুইবার দূর্ভিক্ষের কবলে পরে।ফলে বৃটিশ আমলেই রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হয় ।বাংলাদেশের স্বাধীনতার পূর্বেও সর্বজনীন রেশনিং ব্যবস্থা চালু ছিল। স্বাধীনতার পর গঠন করা হয়েছিল ন্যয্যমূল্যে ভোগ্যপণ্য সরবরাহের জন্য ’কসকর’।কসকরের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ উঠায় কসকর বন্ধ করে, রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হয়।নির্দিষ্ট তারিখে নির্ধারিত রেশন ডিলারের কাছ থেকে রেশন কার্ড হোল্ডাররা কম দামে চাল, আটা, ডাল,সাবান, তেল, লবন, গম, চিনি, ডালডা ইত্যাদি পেতেন।মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের  মানুষ একটি রেশন কার্ড পাওয়ার অধিকারী ছিলেন। ১৯৯০ খ্রি. এই ব্যবস্থার পরিবর্তে “পল্লী রেশনিং” চালু করা হয়। ১৯৮০-১৯৯০ দশকে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে সাফল্য লাভ করে। এই সুয়োগে  বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ইত্যাদি দাতা সংস্থাসমূহ এবং ঋঅঙ রেশনিং পদ্ধতি বাতিল করে মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে প্রবেশ করার জন্য অব্যাহতভাবে বাংলাদেশকে চাপ দিয়ে  ১৯৯২খ্রি. সর্বজনীন রেশনিং ব্যবস্থা বাতিল করাতে সক্ষম হয়। তাদের যুক্তি ছিল রেশনিং ব্যবস্থায় ব্যাপক দুর্নীতি  হয়। অথচ, বিশ্বব্যাংক ভারতের রেশন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রশংসা করে লিখেছে: ‘ভারতের গণবণ্টন ব্যবস্থা আমাদের শিক্ষা দেয় যে এমনকি দরিদ্র রাষ্ট্রের অনিয়মে জর্জরিত কর্মসূচিতেও বড় ধরনের মোড় পরিবর্তন করা সম্ভব।’ 

বর্তমানে অবিরাম মূল্যস্ফীতি ও অসহনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষক, শ্রমিক, মজুর, চাকরিজীবী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সবারই জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তলানিতে ঠেকেছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের নীরব হাহাকার দেখার মত কেউ নেই।  টিসিবি পণ্য বিতরণে কার্ড চালু করলেও এসব পণ্য সংগ্রহে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠে যায়।মধ্যবিত্ত না পারছেন লাইনে দাঁড়াতে, না পারছেন সাহায্য চাইতে।।তাছাড়া টিসিবির ট্রাক সেলের পণ্য সংগ্রহের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা, ছুটাছুটি  জনগণের জন্য অমর্যাদাকরও বটে। এজন্য মধ্যবিত্তরা টিসিবির লাইনে দাঁড়ান না। ওএমএসের ট্রাকেরও কোনো শিডিউল ঠিক থাকে না। দরিদ্র নিম্নবিত্ত শ্রমজীবী মানুষকে বাধ্য হয়ে  কাজ ফেলে ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও অনেক সময় খালি হাতেই ফিরতে হয় অনেককে।

প্রসঙ্গত, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য  ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল। আর ১৯৭২-১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম বাজেট ছিল মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকা অর্থাৎ ৫১ বছরে জাতীয় বাজেটের আর্থিক আকার বর্তমানে ৯৬৭ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু  জিডিপির এই উন্নয়নের সুফল শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন বা অগ্রগতি ঘটায়নি। ১৯৭২ সালে ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা ছিল ৩২ শতাংশ, বর্তমানে ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৬ শতাংশ (সূত্র: বিভিন্ন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা)। ব্যাপকভাবে বেড়েছে আয় বৈষম্য, স্বাস্থ্য সেবা বৈষম্য, শিক্ষা বৈষম্য, সম্পদ বৈষম্য ও খাদ্য বৈষম্য। অন্যদিকে  অতি দ্রুত বেড়েছে ধনী ও অতি ধনীর সংখ্যা। দেশের জনসংখ্যার মধ্যে মোট শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা ৬ কোটি ৮২ লাখ ৬ হাজার- যাদের মধ্যে ৮৫ শতাংশ অর্থাৎ ৫ কোটি শ্রমজীবী মানুষ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। শুধু পোশাক শিল্পেই কর্মরত ৩০ লাখ শ্রমিক।যাদের অধিকাংশই নারী।পোশাকশিল্পের বিশ্ববাজারে প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম-কম্বোডিয়া-ভারত-পাকিস্তান–মিয়ানমার এবং গণচীনে শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু আছে। বিশ্ববাজারে পোশাকশিল্পকে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য এবং টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে এখনই বিশেষ করে পোশাক শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা  জরুরি। কেননা,বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) তথ্য অনুসারে, অতিদরিদ্র মানুষের আয়ের ৩২ শতাংশ ব্যয় হয় চালের পেছনে। 

বিজিএমইএ-বিকেএমইএ সূত্রে জানা যায়, সরকার এ শিল্প খাত থেকে রপ্তানিতে ১ শতাংশ উৎসেকর হিসেবে রাজস্ব পায় - প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া শ্রমিক কল্যাণে সেন্ট্রাল ফান্ড, মুনাফার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ, কল্যাণ ফান্ড, আয়কর, ভ্যাট, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর সব মিলিয়ে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা সরকারি রাজস্বে জমা হয়।সংগত কারণেই এই শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের রেশনিংয়ের মাধ্যমে ১০ হাজার ৮০০ কোটি টাকা প্রদান করা হলে ৩০ লাখ শ্রমিক পরিবারই শুধু উপকৃত হবে না, এর সঙ্গে বিভিন্নভাবে দেশের প্রায় ৪ কোটি লোক উপকৃত হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তৎকালীন পাকিস্তান আমলেও শিল্প কলকারখানা নির্মাণের আগে মালিক পক্ষ শ্রমিকদের থাকার কলোনি, কোয়ার্টার নির্মাণ করত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় , আদমজী জুট মিলে একসময়ে ২০ হাজার শ্রমিক থাকার মতো ২০টি শ্রমিক কোয়ার্টার, ১২টি শ্রমিক কলোনি, ৫টি খেলার মাঠ, শ্রমিক পরিবারের জন্য একটি হাসপাতাল, ২টি হাইস্কুল, ৩টি প্রাইমারি স্কুল ছিল। কিন্তু স্বাধীনদেশে দেশে বর্তমানে ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ১৪ কোটি মানুষের কোন নিজস্ব আবাসন নেই (সূত্র: বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি)।   

খাদ্যনিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার একটি সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে মানুষের  অন্যতম মৌলিক অধিকার। এ ছাড়া খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব।সমাজ থেকে ক্ষুধা দূর করে একটি বৈষম্যহীন ভারসাম্যমূলক সমাজ-রাষ্ট্র গঠনে সর্বজনীন রেশনিং ব্যবস্থার কোন বিকল্প নেই। রেশন কার্ডের জন্য আবেদন থেকে রেশন সংগ্রহ, রেশনের দোকান সবকিছুই ডিজিটাল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা বর্তমানে কোন কঠিন বিষয় নয়। তাছাড়া বায়োমেট্রিক পরিচয় পদ্ধতি ব্যবহার করে রেশন প্রদান করা হলে  একজনের রেশন আরেকজনের পক্ষে জালিয়াতি করে তুলে নেওয়া কোনক্রমেই সম্ভব নয়। বর্তমানে ওএমএস বা টিসিবির ট্রাক সেল নিয়ে ব্যাপক দূর্নীতির অভিযোগও রয়েছে।তাছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণে রেশনিং ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই বিধায় -তা পুনঃ চালু করলে খাদ্যদ্রব্য নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট এমনিতেই অকার্যকর হয়ে পড়বে। তাছাড়া স্বাধীন দেশের মানুষ বিশেষ করে নারীরা হন্যে হয়ে ট্রাকের পিছনে ছুটোছুটি না করে-সম্মানের সঙ্গে রেশন দোকান থেকে তার সুবিধামত সময়ে পণ্য ক্রয় করার অধিকার দাবি করতেই পারে।কেননা সুলভমূল্যে মানুষের নিকট পণ্য পৌঁছে দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব।