হাদি হত্যার প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ, যান চলাচল বন্ধ

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৫:০৭ অপরাহ্ন, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৭:০৩ অপরাহ্ন, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনায় বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশে নেমেছে ছাত্র-জনতা। আন্দোলনের কারণে শুক্রবার সকাল থেকে শাহবাগ মোড়ে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

শুক্রবার ভোর থেকেই শাহবাগ এলাকায় মানুষ জড়ো হতে শুরু করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। দুপুরের দিকে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ঢল নামে এলাকায়। বিক্ষোভ চলাকালেই শাহবাগ মোড়ে জুমার নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ওসমান হাদি চত্বর’ ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন: তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষ্যে ঢাকা–১৮ বিএনপির শোকরানা দোয়া ও প্রস্তুতি সভা

বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) সাদিক কায়েমের ঘোষণায় শাহবাগে আধিপত্যবাদবিরোধী সমাবেশ শুরু হয়। মৎস্য ভবনমুখী সড়কে ডাকসুর সদস্যরা একটি ট্রাকের ওপর অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদী স্লোগান দেন। একই সময়ে জুলাই ভাস্কর্যের পাদদেশে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের নেতাকর্মীদেরও বড় ধরনের অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়।

সমাবেশে আন্দোলনকারীদের ‘আর নয় প্রতিরোধ, এবার হবে প্রতিশোধ’, ‘এক হাদি লোকান্তরে, লক্ষ হাদি ঘরে ঘরে’সহ নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।

আরও পড়ুন: সড়ক ছেড়ে দিলেন জুলাই ঐক্যের কর্মীরা, যান চলাচল স্বাভাবিক

এই বিক্ষোভে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ অংশ নেন। বক্তারা হাদি হত্যার বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানান।

বিক্ষোভকারীদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ। তারা ঘোষণা দেন, শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছানো পর্যন্ত শাহবাগ মোড়ে তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, “আমরা আমাদের ভাই হাদি হত্যার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বো না। আমাদের এই অবরোধ কর্মসূচি চলমান থাকবে।” তিনি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন।

ডাকসু নেতা এবি জুবায়ের বলেন, শহীদ শরিফ ওসমান হাদি কোনো সহিংসতার পথে বিশ্বাসী ছিলেন না। মেধা, মনন ও জ্ঞানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তোলাই ছিল তার আদর্শ। তিনি আন্দোলনের নামে কোনো ধরনের উসকানি বা সহিংসতায় না জড়িয়ে শান্তিপূর্ণ ও সংগঠিতভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীতে রিকশায় আরোহনরত অবস্থায় শরিফ ওসমান হাদি মোটরসাইকেলে থাকা দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে ১৫ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মারা যান।