সারাদেশে ডেঙ্গু ও করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন নির্দেশনা জারি

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:৫৯ অপরাহ্ন, ২০ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ৭:৩২ পূর্বাহ্ন, ২১ জুলাই ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

দেশজুড়ে ডেঙ্গু ও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়ন ও রোগ প্রতিরোধে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রোববার (২০ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত একটি সার্বিক নির্দেশনাপত্র দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে ফ্লু কর্নার/ফিভার কর্নার স্থাপন করতে হবে। জ্বরের রোগী এলে গাইডলাইন অনুসারে ট্রিয়াজ করে রোগীদের এ, বি ও সি গ্রুপে ভাগ করে চিকিৎসা দিতে হবে।

আরও পড়ুন: ৩৩ ধরনের ওষুধের দাম কমালো, সাশ্রয় ১১৬ কোটি টাকা

সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু শনাক্তে পর্যাপ্ত কিট মজুত রাখতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত ফি অনুসরণ করতে হবে, যা স্থানীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে থাকবে।

প্রতিটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য ডেডিকেটেড ওয়ার্ড ও প্রশিক্ষিত চিকিৎসক দল গঠন, আইভি ফ্লুইড মজুত এবং ফ্লুইড ব্যালান্স মনিটরিং চার্ট সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে সরকারিভাবে প্লাটিলেট সংগ্রহের ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল ও ভ্যাট ফোরামের স্বাস্থ্যচুক্তি

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত মশারির ব্যবস্থা, মৃত্যুর ক্ষেত্রে পর্যালোচনা প্রতিবেদন পাঠানো এবং রোগীদের জিও লোকেশন ট্রেসিংয়ের জন্য সঠিক মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া ডেঙ্গু ট্র্যাকিংয়ের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তৈরি অ্যাপ ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, দর্শনার্থীর সংখ্যা সীমিত করা এবং মশার বংশবিস্তারে বাধা দেওয়া সংক্রান্ত দিকনির্দেশনাও রয়েছে।

বর্তমানে দেশের ২১টি মেডিকেল সেন্টারে প্লাটিলেট সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (DMCH), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ (NICVD), চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (CMCH), সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র।

নতুন নির্দেশনায় কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মাস্ক পরা, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা এবং জরুরি ও বহির্বিভাগে জ্বরের রোগীদের পৃথকভাবে পরীক্ষা-পর্যবেক্ষণ করা।

প্রতিটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ, চাহিদা অনুযায়ী কোভিড শয্যা প্রস্তুত রাখা, র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট সংগ্রহ এবং আরটি-পিসিআর পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী নমুনা প্রেরণের নির্দেশনা রয়েছে।

কোনো রোগীকে যৌক্তিক কারণ ছাড়া রেফার না করতে বলা হয়েছে। রেফার করার প্রয়োজন হলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করে তা করতে হবে। কোভিড চিকিৎসায় ‘ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন (ভার্সন ১০)’ অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ, হাসপাতালগুলোতে আগত রোগী ও দর্শনার্থীদের মধ্যে কোভিড সচেতনতা বৃদ্ধির ওপরও গুরুত্বারোপ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।