বিচারিক হত্যার শিকার হয়েছেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী: হুম্মাম কাদের

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৭:৩৪ অপরাহ্ন, ১৪ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ৭:৩৪ অপরাহ্ন, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ‘জুডিশিয়াল কিলিং রায়’-এর মাধ্যমে হত্যা করার অভিযোগ প্রমাণে তথ্যাদি সংগ্রহে রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উকিল নোটিশ পাঠাবে তার পরিবার।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডির বাসায় পরিবারের সদস্যদের পক্ষে তার ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

আরও পড়ুন: আল বদর বাহিনী ধর্মকে বিক্রি করছে, বিএনপি বিশৃঙ্খলাকে প্রশ্রয় দেয় না: আমিনুল হক

তিনি বলেন, ‘‘চারজন ব্যক্তি বাংলাদেশে আসতে চাচ্ছিলেন… তারা বাবার ডিফেন্স উইটনেস হিসেবে বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন। তবে ট্রাইব্যুনাল সেটাও নাকচ করে দেয়। তারা ছিলেন, মুনীম আরজুমান খান, আমবার হারুন সাইগেল, ইশহাক খান খাগওয়ানি ও নিয়াজ আহমেদ নূর। এই চারজন ব্যক্তি পরবর্তীতে ইউটিউবের মাধ্যমে নিজেরা তাদের এভিডেন্স দিতে চেয়েছিলেন, সেটা পাবলিশ করে দেন।’’

‘‘এই ব্যক্তিগুলো প্রমাণ করতে পারতেন যে, আব্বা ১৯৭১ সালে পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি ছিলেন। এই নামগুলো বলার কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশ ফরেন মিনিস্ট্রি তাদের বিদেশি দূতাবাস যেগুলো আছে, সেখানে যখন কোনো মেসেজ পাঠানো হয়, সেগুলোকে সাইফার বলা হয়। সেই সাইফার মেসেজগুলো বেশিরভাগ সময় কোডেড ও সিক্রেট থাকে। এটার একটি সাইফার মেসেজ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। এতে বলা আছে, এই চার জনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, কোনোভাবে তাদের যেন ভিসা না দেওয়া হয়। এই সাইফার মেসেজের মাধ্যমে প্রমাণ হচ্ছে যে, আব্বার সঙ্গে একটা খুব বড় অন্যায় হয়েছে… আমার বাবাকে তারা কোনোভাবেই ফেয়ার জাস্টিসের কাছাকাছিও আনতে পারলো না, আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে… এটা একটা জুডিশিয়াল মার্ডার ছিল। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের রেজিমের সরকার সরাসরি জড়িত ছিল।’’

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড অফিসার্স এসোসিয়েশন নির্বাচন, সভাপতি মোহাম্মদ বায়েজীদ ভূঞা

হুম্মাম বলেন, ‘‘আপনারা বুঝতে পারছেন যে, সাক্ষীদেরকে বাংলাদেশে না আসতে দিয়ে, একজন মানুষকে ডিফেন্স ঠিক মতো না দিতে দেওয়া কত বড় অনিয়ম হয়েছিল। আমরা আহ্বান করতে চাই, আমরা বর্তমান ফরেন মিনিস্ট্রিকে একটা লিগ্যাল নোটিশ পাঠাচ্ছি। আমরা তাদের কাছে ডিমান্ড করছি এই সাইফার মেসেজগুলো ডিক্লাসিফাই করে দেওয়া হোক।’’

‘‘আমার বাবার ট্রায়ালের সঙ্গে যতগুলো সাইফার মেসেজ জড়িত আছে প্রতিটা যেন ডিক্লাসিফাই করে দেওয়া হয় এবং সেগুলো যেন আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমরা রোববারই নোটিশ পাঠাবো। আমি আশা করি, আপনারা আমাদেরকে এই হত্যার ন্যায়বিচার পেতে সহযোগিতা করবেন।’’

একই সঙ্গে ‘এই সাইফার মেসেজের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যারা জড়িত তাদের নাম’ প্রকাশের দাবি জানান তিনি।

‘এরপর আদালতে যাবে পরিবার’

হুম্মাম বলেন, ‘‘এগুলো আমরা মিডিয়া ট্রায়ালের জন্য করছি না। আমাদের কাছে অলরেডি যেই এভিডেন্স আছে, এই এভিডেন্স নিয়েই কিন্তু আমরা সরাসরি হাইকোর্টে যেতে পারি। আমরা চাইছি এই সরকার (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) এবং বর্তমান জুডিশিয়ারিকে সম্মান দেখিয়ে তাদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা বার কোর্টে যাবো।’’

‘‘আশা করি, আমরা প্রমাণ করতে পারবো যে, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী নির্দোষ ছিলেন এবং তাকে জুডিশিয়াল মার্ডার করা হয়েছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যে আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করেছি যেন এটার গ্রাউন্ড তৈরি করে দেওয়া হয়। আমরা রিটের মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ কোর্টে যেতে পারবো। আশা করছি, অন্তত যদি সরকারের সহযোগিতা পাই, এগুলো যদি ডিক্লাসিফাই হয়ে যায়, তাহলে ওই এভিডেন্সটাই নিয়েই আমরা আদালতে যাবো।’’

‘‘আমরা এখন কোর্টে যেতে পারি, কিন্তু আমরা সব ফরমালিটি মেইনটেইন করেই কোর্টে যাবো। আশা করছি রোববারই আমরা আদালতে পিটিশন করবো।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমার আব্বাকে যখন ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলাম তখন বলা হয়েছে যে, আপনাদের তো এত ডিফেন্ড করার দরকার নাই। আপনারা তো বলছেন যে, আপনাদের মক্কেল দেশে ছিল না।’’

‘‘তাহলে আমার বাবা যে দেশে ছিলেন না সেটা প্রমাণ করার জন্য কিন্তু আমরা ডিফেন্স উইটনেস আনতে পারিনি। এই সাইফারের মাধ্যমে ব্লক করে রাখা হয়েছিল।’’

‘একটা গুলিতেই বাবাকে শেখ হাসিনা হত্যা করতে পারতেন’

হুম্মাম বলেন, ‘‘এই আইসিটির মাধ্যমে তারা যাদেরকে মেইন এনেমি হিসেবে দেখতো তাদেরকে এভাবে হত্যা করা হয়েছে।’’

‘‘বাবাকে শেখ হাসিনা চাইলে হয়তো একটা গুলিতে হত্যা করতে পারতেন। তার লক্ষণ কিন্তু এটা ছিল না, তার লক্ষণ ছিল যে, আব্বার যে রাজনীতিটা আছে সেটাকে ধ্বংস করে দেওয়া। আব্বা একজন ন্যাশনালিস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন।’’

২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর রাতে পুরনো ঢাকায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ওইদিন একই সময়ে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদেরও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়। এই রায় পরবর্তীতে উচ্চ আদালতও বহাল রাখে।

প্রয়াত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ধানমন্ডির বাসা কিউ সি রেসিডেন্সে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এই বাসায় তার সহধর্মিণী ফরহাত কাদের চৌধুরী, তার দুই সন্তান বড় ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী ও ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে নিয়ে বসবাস করেন।

‘রায় লেখা হতো ল’ মিনিস্ট্রিতে’

হুম্মাম বলেন, ‘‘আমার বাবার বিরুদ্ধে ২০টা অভিযোগ আনা হয়… এজন্য আইসিটি কেবল চার জন সাক্ষী এলাউ করেছিল। আমরা তাও লড়াই করে গেছি। আপনাদের মনে আছে, আমাদেরই একজন তৎকালীন জজ, তিনি নিজে সাক্ষ্য দিতে আসতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, ওই সময় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটিতে তার সাথেই ছিলেন। তিনি তখন জাস্টিস এসকে সিনহার কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু জাস্টিস সিনহা অনুমতি দেননি।’’

‘‘আব্বার কেস চলাকালে স্কাইপে ফাঁস হয়েছিল, যেখানে জাস্টিস নাজিম বলেছেন যে, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ফাঁসি দিতে পারলে আমাকে সুপ্রিম কোর্টে আপিল বিভাগে জায়গা দেওয়া হবে। আজকে এখানে আমি বলতে চাই, সেদিন রায় ঘোষণা করা হয়, সেদিন আমার বাবার হাতেই রায় ছিল… সেই রায়টাও মিনিস্ট্রি থেকে বের হয়ে এসেছিল।’’

‘গ্রেফতার করে তাকে চরমভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল’

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী বলেন, ‘‘আমার কাছে এখনও ভিডিওগুলো আছে… আমি জানি না কে একজন ভিডিওগুলো আমাদের কাছে পাঠিয়েছিল… যখন রাতে বেলা তাকে নিয়ে যাওয়া হয় তখন সারা রাত টর্চার করে পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়… পিজি হাসপাতালের একটা ভিডিওতে দেখা গেছে, তাকে যখন বের করে আনা হচ্ছে তখন দেখা গেছে, তাকে মারা হয়েছে… তার এখানে-ওখানে রক্ত।’’

‘‘এতো মানুষকে মেরেছে এরা… আমি চাই না ওরকমভাবে কারও টর্চার হোক। আর এই গভার্নমেন্ট বোধহয় ওরকমভাবে টর্চার করছে না। কিন্তু তখন বেশির ভাগ মানুষ চুপ ছিল… সাংবাদিকরা দেখেছিল যে, উনার (সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী) পুরো কাপড়ে রক্ত… এখন কি এমনটি দেখেন? ছয়বার উনি সংসদ সদস্য ছিলেন, ’৭৯ থেকে ২০১৩… সিটিং এমপি ছিলেন… কিন্তু সিটিং এমপি হিসেবে অনেক নির্যাতন সহ্য করেছেন। আমি চাই না, যার মাধ্যমে আমার হাসব্যান্ডকে হত্যা করা হয়েছে, ওরকম যেন এখন না হয়, আর যেন কাউকে এমন নির্যাতন না করে যেমনটি আমার হাসব্যান্ডকে এবং আমার পরিবারকে করেছে।’’

‘বিদেশীরাও জানতো আব্বাকে হত্যা করা হবে’

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বড় ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা যখন আব্বার জীবনটা বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন দূতাবাসে দৌঁড়াচ্ছিলাম, আব্বাকে বাঁচাতে আমরা যখন লড়াই করছিলাম… বিদেশীরাও কিন্তু জানতো… বিদেশীরা আমাদেরকে এটা বলেছিল যে, ট্রাইব্যুনালটা করেছে একটা শো করার জন্য। কিন্তু সেটা তারা ওপেনলি আমাদেরকে বলতে পারেনি।’’

‘‘তাদের (বিদেশীদের) মুখে আমরা শুনেছিলাম যে, এই ট্রাইব্যুনালটা করা হয়েছিল খুন করার জন্য। একটা জিনিস প্রমাণ করার জন্য যে, শেখ হাসিনা খুন করতে পারে। এটাই কিন্তু আমার বাবাকে ফাঁসি দিয়ে, বাকিদেরকে ফাঁসি দিয়ে, তখনই তার (শেখ হাসিনার) যে ক্ষমতা, ভয়-ভীতি দিয়ে সে সবাইকে চালাতে পারতো, সেই জিনিসটা সে প্রমাণ করতে চেয়েছিল এবং সেটাই সে করতে পেরেছে গত ১৫ বছর ধরে। এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষ সবাই জানে যে, শেখ হাসিনা খুন করতে পারে।’’

তিনি বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা খুন করতে পারে—আমরাই তখন বুঝেছি। আব্বা ছিলেন সেখানে একটি ভিকটিম, কো-লেটারাল ড্যামেজ। তাকে খুন করে শেখ হাসিনা চিরদিন ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল… এটাই ছিল তার মূল টার্গেট।’’

‘আইসিটি ছিল বিতর্কিত’

হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, ‘‘দেখুন, ট্রাইব্যুনালটাই যে বিতর্কিত ছিল এটা শুধু বাংলাদেশ না, পুরো বিশ্বই জানে। তবে আমাদেরকে স্পেসিফিকভাবে এভিডেন্স নিয়ে কোর্টে যেতে হচ্ছে। সেই জন্য এই এভিডেন্স নিয়ে কোর্টে আমরা যাব।’’

‘‘আমি বলে দিতে পারি, এই ট্রাইব্যুনালটা একটা কনট্রোভারশিয়াল ট্রাইব্যুনাল ছিল। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি তখন কামব্যাক করতে, কিন্তু তখন ওই সুযোগ ছিল না। কারণ পুরো সরকার ওটাকে প্রটেক্ট করে রেখেছিল। বর্তমান সরকার, আশা করছি, আমাদেরকে সহযোগিতা করবে।’’

‘সাক্ষীরা ছিল সাজানো’

হুম্মাম বলেন, ‘‘যারা সাক্ষী দিয়েছে, তাদের সঙ্গে আমরা আলাপ করেছি… তারা বলেছে, তাদেরকে অনেকদিন ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল। তারা বলেছে, আমাদেরকে অনেক দিন টর্চার করা হয়েছে, চাপ দেওয়া হয়েছে… এভাবে করেই আমরা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য হয়েছি।’’

‘‘দেখুন, আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশ অনেক কিছু সহ্য করে এসেছে… আমরা তাদেরকে আবার ট্রমাটাইজ করে ওইটার মধ্যে যেতে চাই না। আমরা যেটা চাই, আমাদের কাছে বর্তমানে যেসব কাগজ আছে সেগুলো নিয়েই আমরা আদালতে যাব।’’

‘তবে কোনো সাক্ষী যদি নিজে সহযোগিতা করতে চায়, তাহলে তাকে আমরা ‘ওয়েলকাম’ করবো’ বলে জানান তিনি।

এই ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমীর, সেক্রেটারি জেনারেল, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলসহ শীর্ষ নেতাদেরও ফাঁসি হয়েছে—ফলে আপনি পুরো ট্রাইব্যুনালের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘পুরো ট্রাইব্যুনালটাই ছিল বিতর্কিত, পুরো বিচার প্রক্রিয়াটাই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল, এখনো আছে।’’

‘‘এখন আপনারা ওই সময়ে প্রকাশিত স্কাইপের বিষয়টা ধরে নেন, তাহলে তো ওই সুতো ধরে এই ট্রাইব্যুনাল টিকতো না। তবে হাসিনার আদেশ ছিল যেভাবেই হোক এই ট্রাইব্যুনালকে টিকিয়ে রাখতে হবে। আর বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের বক্তব্য তো আপনারা শুনেছেনই… এই ব্যক্তিগুলোকে ফাঁসি দিতেই হবে… তারা তো অপেক্ষা করেনি যে, এভিডেন্স কী আসছে অথবা স্টেটমেন্ট কে কী দিচ্ছে… তাদের ডিসিশন যেদিন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল সেদিনই হয়ে গিয়েছিল। সকলে কিন্তু এক ব্যক্তির অর্ডারে কাজ করেছেন—সেটা হচ্ছে শেখ হাসিনা। আমাদের বিশ্বাস, একদিন না একদিন শেখ হাসিনার বিচার হবে।’’

‘শেখ পরিবার ও চৌধুরী পরিবারের মধ্যে বন্ধুত্ব থাকার পরও কেন এমনটা হলো?’

ছোট ছেলে হুম্মাম বলেন, ‘‘নামটা অনেক বড় ছিল যে… সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী নামটা বড়—এটা শেখ হাসিনার সহ্য হচ্ছিল না। জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদদের মধ্যে আমার বাবার নামটা অনেক বড় ছিল।’’

‘‘আপনারা দেখবেন, যতগুলো ডানপন্থি রাজনীতিবিদ ছিলেন, বেশিরভাগের ওপরই এই ধরনের জুলুম হয়েছে... আপনি ইলিয়াস আলী সাহেবের কথা চিন্তা করে দেখুন, আপনি সালাহউদ্দিন আহমদ সাহেবের কথা চিন্তা করে দেখুন… সবার ওপরে কী ঘটেছে।’’

‘সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রাণভিক্ষা চাননি’

হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, ‘‘আমি ফাঁসির আগে বাবাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম—আব্বা, তুমি কোনো মার্সি পিটিশন ফাইল করেছো কিনা? আমার বাবা বলেছিলেন, ‘আমি ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা মানুষ… মাথা কারও কাছে নিচু হবে না। আমি আল্লাহর কাছে যাচ্ছি, গিয়ে আল্লাহর কাছেই বিচার চাইব।’’

‘‘এখানে মার্সি পিটিশনের কথা তো আসেই না। ওই সময়ে যে কাগজটা আমার হাতে দেখেছেন, ওটা একটা রি-ট্রায়ালের পিটিশন—আমি নিজে নিয়ে গিয়েছিলাম রাষ্ট্রপতির কাছে। রাষ্ট্রপতি (আবদুল হামিদ) সাহেব আমার সঙ্গে তখন দেখা করেননি। উনিও লজ্জায় ছিলেন।’’

তিনি বলেন, ‘‘এখনো বলছি, সরকারের কাছে যদি কোনো মার্সি পিটিশন থেকে থাকে, আমিও তা দেখতে চাই।’’

সংবাদ সম্মেলনে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরীর সহধর্মিণী ব্যারিস্টার ডানিয়া খন্দকার এবং মাহবুবুল আহসান উপস্থিত ছিলেন।