তদন্ত কমিটির সময় বৃদ্ধি

পবিপ্রবি শিক্ষার্থী হাসপাতালে মৃত্যু, এক চিকিৎসক ওএসডি

Sanchoy Biswas
অপূর্ব সরকার, পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ৮:২৩ অপরাহ্ন, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ৯:৫০ অপরাহ্ন, ১৫ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) শিক্ষার্থী হুসাইন মোহাম্মদ আশিক পানিতে ডুবে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেওয়ার সময় তিনদিন বাড়ানো হয়েছে। গত ১৪ এপ্রিল দুপুরে আশিক সহপাঠীদের সাথে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে যায় এবং বিকেলে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

এ ঘটনার পর আজ বুধবার পটুয়াখালীর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জুনিয়ন কনসালটেন্ট (কাডির্ওলোজি) এ,এস, এম শামীম আল আজাদকে ওএসডি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সংযুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারী করেছে।

আরও পড়ুন: ১৫ আগস্ট ঘিরে গোপালগঞ্জে কঠোর নিরাপত্তা

স্বাস্থ্যওপরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন-এর ১৬ জুলাই স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে পুনারাদেশ না দেয়া পর্যন্ত ডা. এ.এস.এম শামীম আল আজাদ (বিপি১০১২৮১৩) জুনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিওলজি পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতাল থেকে ওএসডি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালীতে সংযুক্ত করা হলো।

এদিকে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আজ বুধবার বিকেলে হাসপাতালের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে গত ১৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হুসাইন মোহাম্মদ আশিক পানিতে ডুবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকদের অবহেলার অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে ইর্টান ও চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশিকের প্রকৃত মৃত্যুর ঘটনাটি আড়াল করতে বিভিন্ন রকম প্রোপাগন্ডা চালানো হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলেন, আমরাও চাই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্‌ঘাটন হউক। আসলে জনগণকে প্রকৃত সত্যতা সম্পর্কে অবগত করতে এক সংবাদ সম্মেলনের তারা আয়োজন করেন এবং এর জন্য ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন,

আরও পড়ুন: শ্রীপুরে খালেদা জিয়ার জন্মদিনে দোয়া, দুস্থদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ

ওএসডি চিকিৎসক এ.এস.এম শামীম আল আজাদ, হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মশিউর রহমান, চিকিৎসক ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার শাহরিয়ার আনজুম শুভ, ইন্টার্ন ডাক্তার সাদিয়া রহমান রিমি, অন্যনা আক্তার ইলমীসহ ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল বিকেলে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) শিক্ষার্থী হুসাইন মোহাম্মদ আশিক পানিতে ডুবে অসুস্থ হয়ে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। ওই দিন দুপুরে আশিক সহপাঠীদের সাথে পুকুরের গোসলে গিয়ে পানিতে ডুবে অসুস্থ হয়।

আশিকের মৃত্যুর খবরে বিক্ষদ্ধ হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীরা। সহপাঠীর মৃত্যুর জন্য শিক্ষার্থীরা চিকিৎসকের অবহেলাকে দায়ী করে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করে। জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনীর ও পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

এঘটনায় জেলা প্রশাসন আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে সিভিল সার্জন মো. খালেদুর রহমান মিয়াকে। এছাড়া অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. তারেক হাওলাদার. অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজলকে সদস্য করা হয়েছে।

এছাড়া তদন্ত কমিটিতে পবিপ্রবির প্রক্টর, পবিপ্রবি মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক, পবিপ্রবির শিক্ষার্থী মইন উদ্দিন, নুরে আল ফাহাদ এবং মীম সাদাত শাহরিয়ারকে সদস্য করা হয়েছে। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন কমিটিকে আগামী এক কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশনা দিয়েছেন। তরে পরদিন তদন্ত ও প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় তিনদিন বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও ১৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সকল পরীক্ষা এবং ক্লাস স্থগিত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগে তুলে ১৫ এপ্রিল বিকেলে দুমকির লেবুখালী ইউনিভার্সিটি স্কয়ার সংলগ্ন পায়রা সেতুর টোল প্লাজায় অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

শিক্ষার্থী হুসাইন মোহাম্মদ আশিক পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী । আশিকের বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজারহাট এলাকায় । তার পিতা নূরে আলম সরকার পুলিশের উপপরিদর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন। ১৪ এপ্রিল রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ চত্বরে আশিকের নামাজের জানাজা শেষে তার মরদেহ নিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।