প্রধান উপদেষ্টার সহকারীকে ঘুষ দিতে চেয়েছিল বৈষম্যবিরোধী নেতা সাকিব

Sanchoy Biswas
বগুড়ার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৪:৫৭ অপরাহ্ন, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১১:২০ পূর্বাহ্ন, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বগুড়ার বৈষম্যবিরোধী সমন্বয়ক ছাত্র আন্দোলনের বগুড়া জেলা কমিটির নেতা ও সাবেক সদস্য সচিব সাকিব খান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীকে ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। গত (২২শে অক্টোবর) বুধবার রাজধানীর শাহবাগ থানা থেকে ঢাকা মহানগর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো নথিতে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

গত (২৩শে অক্টোবর) বৃহস্পতিবার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাকিব খান নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব পরিচয়ে একজন পুলিশ সুপারের (এসপি) পদায়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীকে একটি মোবাইল নম্বর থেকে ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই সূত্র ধরে ঢাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা ও যৌথ বাহিনী কর্তৃক সাকিব খানকে বগুড়া শহরের নারুলী বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়।

আরও পড়ুন: অমানবিক পুশইনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করলো বিজিবি

গত বুধবার আদালতে জামিন শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলাম।

এর আগে সোমবার শাহবাগ থানার এসআই শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ২২ ও ২৭ ধারায় সাকিব খানকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আদালতে পাঠানো নথিতে স্বাক্ষর করেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান।

আরও পড়ুন: জামালপুরের আলোচিত মনিরুল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার

এতে উল্লেখ করা হয়, সাকিব খান নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব পরিচয়ে একজন পুলিশ সুপারের (এসপি) পদায়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীকে একটি মোবাইল নম্বর থেকে ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সাইবার অপরাধ মনিটরিং কালে এসব তথ্য পেয়ে সাকিব খানকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ২২ ও ২৭ ধারায় বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ কারণে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন। জামিন দিলে চিরতরে পলাতক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এতে মামলার তদন্ত ব্যাহত হবে।

এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা সাকিব খান ও তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারীর নাম ভাঙিয়ে পুলিশ সদস্য ও বিসিএস কর্মকর্তাদের পদায়ন এবং নিয়োগের কথা বলে অর্থ আদায় করে আসছিলেন। আসামি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য।

এদিকে, গত বুধবার সাকিব খানকে সাইবার সুরক্ষা আইনে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশসহ সব কালো আইন বাতিলের দাবিতে বগুড়ায় সাধারণ ছাত্র-জনতার ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। এতে এনসিপি ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে, সাকিব খানের বাবা ফরহাদ হোসেন জানান, ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে সাকিব খানকে ফাঁসানো হয়েছে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়ী করে সাকিব খান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দিয়েছেন। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশ মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে বলে জানান তিনি।

সূত্র: দেশ টিভি।