দুই মসজিদের ইমামের ভয়ঙ্কর প্রতারণার শিকার ২১টি পরিবার
ভয়ঙ্কর প্রতারণার শিকার হয়ে ২১টি পরিবার দিশেহারা হয়ে সর্বশান্ত ও অসহায় হয়ে পড়েছে। দুইটি মসজিদের ইমামসহ একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ধর্মীয় কথা ও লেবাসকে বিশ্বাস করে নিরাপদ ভেবে তাদের হাতে সারা জীবনের সঞ্চয় ও ভবিষ্যতের স্বপ্ন তুলে দিয়েছিল। কিন্তু তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে নিঃস্ব অবস্থায় আতঙ্কে বসবাস করছে। প্রতারকদের সাথে জড়িত রয়েছে একটি অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানে প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন ২১টি পরিবার।
গতকাল (১৫ ডিসেম্বর) সোমবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) নিচতলার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাজী শামসুল কবির, আবুল বাশারসহ অন্যান্যরা।
লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ কাজী শামসুল কবির বলেন, আমরা ৩০ জন ব্যক্তি একটু মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের জন্য অনেক কষ্ট আর চোখভরা স্বপ্ন নিয়েই বসিলা গ্রীন সিটি-২ এলাকায় ৭ কাঠা জমি কিনে সেখানে ১০ তলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। সবাই মিলে ‘বায়তুল আসকান’ নামে একটি অ্যাসোসিয়েশন গঠন করি এবং বিশ্বাসের জায়গা থেকে দুইটি মসজিদের ইমাম রফিকুল ইসলামকে কমিটির সভাপতি ও আব্দুল কাদিরকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরে তাদের হাতেই জমির দলিলসহ সব কাগজপত্র তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনি সেই বিশ্বাসই একদিন আমাদের সর্বনাশ ডেকে আনবে। বিগত ২০১৭ সালে ভবন নির্মাণ শুরু হয়। ২০২১ সালে ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পরই আমাদের দুঃস্বপ্ন শুরু হয়।
আরও পড়ুন: মাইলস্টোন কলেজ বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সভা
তিনি আরও জানান, নির্মাণ করা ১০ তলা ভবনের ৩৬টি ফ্ল্যাটের মধ্যে আমাদের পাওয়ার কথা ছিল ২১টি। কিন্তু সেসবের সঠিক বণ্টন তো দূরের কথা, সকলের অজান্তে ১৫টি ফ্ল্যাট নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে দেয় সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির। জমির দাম, নির্মাণ খরচের প্রতিটি ধাপে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হলেও ফ্ল্যাটের কোনো রেজিস্ট্রেশন বা কোনো অডিট নেই, হিসাব নেই। সর্বোপরি কোনো স্বচ্ছতা না থাকায় বুকের ভেতরে ভয় ঢুকে পড়ে। এক বছর ধরে অপেক্ষা করছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে আমরা যার যার ফ্ল্যাটে ওঠা শুরু করি। কারণ আমাদের আর যাওয়ার জায়গা ছিল না। আমরা বলেছিলাম আমাদের কাগজপত্র ও হিসাব বুঝিয়ে দিতে। এছাড়াও নতুন কমিটি গঠনের অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু এর জবাবে আমরা পেয়েছি হুমকি। গত ১০ ডিসেম্বর থেকে আমাদের কয়েকজনকে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের ভয় দেখানো হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে গত ১৩ ডিসেম্বর রাজধানীর শেরেবাংলানগর থানায় একটি জিডি করি (জিডি নং-১০৪৩, তারিখ: ১৩/১২/২০২৫ ইং)। আমরা ৩০টি পরিবার আতঙ্কে রয়েছি, কখন কার কী হয়—এটা ভেবে। প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর অনুরোধ, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক, আমাদের প্রাপ্য ফ্ল্যাট ও অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক এবং প্রতারকদের সুষ্ঠু বিচার করা হোক।





