চাকসুর প্রতিনিধি আকাশ দাশের বুয়েট শিক্ষার্থীর ধর্ষণ কে সমর্থন করে পোস্ট: উত্তাল চবি

Sanchoy Biswas
মো. সাবিত বিন নাছিম, চবি
প্রকাশিত: ৮:৫৯ অপরাহ্ন, ২২ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১২:০৪ অপরাহ্ন, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

সম্প্রতি বুয়েট শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায় কর্তৃক নিজ মুসলিম ছাত্রীকে গাঁজা সেবন করিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম Reddit-এ এই স্বীকারোক্তি প্রদান করেন তিনি। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন চাকসুতে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে নির্বাহী সদস্য পদে জয়ী হওয়া আকাশ দাস। পরবর্তীতে পোস্টটি সরিয়ে দিলেও এ ধরনের পোস্ট সাম্প্রদায়িক বিতর্ক উসকে দিতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া চাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে নির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আকাশ দাস। এবার তিনি বুয়েট শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায় কর্তৃক মুসলিম ছাত্রীকে গাঁজা সেবন করিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন। উক্ত পোস্টে আকাশ দাস ধর্ষকের বিচার না দাবি করে তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। পোস্টে আকাশ দাস বলেন, “ছেলেটা যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে অবশ্যই তার শাস্তি আমি দাবি করছি, কিন্তু মেয়েটা যে নির্দোষ এমনটাও তো নয়। বরং যে ধরনের ধর্ষণকাণ্ডগুলো ঘটে থাকে বেশিরভাগ মেয়েরাই ছেলেদের ফাঁসানোর জন্য ধর্ষণকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। এখানেও এমনটা ঘটেছে কিনা সেটিও তদন্তের আওতায় আনা উচিত বলে আমি মনে করি। ছেলের দোষ যদি ৭০% থেকে থাকে তাহলে আমি বলবো মেয়েটার দোষ ৩০% হলেও আছে। হয়তোবা মেয়েটার মনের মত ছিল না বলে ছেলেটাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। বিগত ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে এমনটাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘটেছে।”

আরও পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫–২০২৬ শিক্ষাবর্ষের আইবিএ এমবিএ ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন

শিক্ষার্থীদের দাবি, আকাশ দাসের এই ধরনের পোস্ট ধর্ষণকে প্রশ্রয় দেয় এবং সাম্প্রদায়িক বিতর্ক উসকে দেয়। এই বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইম হোসেন দুর্জয় বলেন, “শিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে জয়ী আকাশ দাসের ধর্ষণ সমর্থিত বক্তব্য ক্ষুণ্ণ করছে শিবিরের ভাবমূর্তি, পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাবমূর্তিও। তিনি একজন সংখ্যালঘুকে সমর্থনের উদ্দেশ্যে পরোক্ষভাবে সমর্থন করেছেন। আমরা শিক্ষার্থীরা এই রকম নিচু মানসিকতার প্রতিনিধি চাই না। অবিলম্বে তার পদত্যাগ দাবি করছি।”

আকাশ দাসের এরূপ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সনাতন শিক্ষার্থী বলেন, “ধর্ষণ একটি ঘৃণ্যতম অপরাধ, এটি যেই ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি-ই করুক না কেন। আর চাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধি আকাশ দাস এই অপরাধকে সমর্থন করে অবশ্যই ঘৃণ্যতম অপরাধ করেছেন বলে আমি মনে করি। শীঘ্রই যেন তিনি জনসম্মুখে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।”

আরও পড়ুন: জ্যোতির্বিদদের অনুসন্ধানে উন্মোচিত মহাবিশ্বের রহস্য

এ বিষয়ে চাকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে জয়ী হওয়া ভিপি মো. ইব্রাহিম রনি বলেন, “চাকসুর নবনির্বাচিত সদস্য আকাশ দাস বুয়েটের ধর্ষণ ঘটনাকে ঘিরে তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে যে নিন্দনীয় মন্তব্য করেছেন, আমি তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তিনি যেন অবিলম্বে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন—এই আহ্বান জানাচ্ছি।”