লেবাননের চার শহরে ইসরাইলের ব্যাপক বিমান হামলা, বেইরুতের তীব্র নিন্দা
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের চারটি শহরে একযোগে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এসব হামলায় অন্তত একজন নিহত ও নয়জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে লেবাননের গণমাধ্যম। বেইরুতের দাবি, এই হামলার মাধ্যমে ইসরাইল যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সংঘটিত এই হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে লেবানন সরকার ও হিজবুল্লাহ। খবর—আলজাজিরা।
আরও পড়ুন: 'ফিফা শান্তি পুরস্কার’ পেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তাদের টার্গেট ছিল হিজবুল্লাহর সামরিক স্থাপনা। তবে লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এনএনএ জানায়, যুদ্ধবিমানগুলো টায়ার জেলার বেসামরিক এলাকা লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করেছে।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এক বিবৃতিতে বলেন, “আজকের হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইসরাইল আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে চাইছে।” তিনি অভিযোগ করেন, যুদ্ধবিরতির পরও ইসরাইল কোনো রাজনৈতিক সমাধানে আগ্রহ দেখাচ্ছে না এবং নিয়মিত হামলার মাধ্যমে তা স্পষ্ট করছে।
আরও পড়ুন: ডনবাস ইস্যুতে কোনো ছাড় নয়, কঠোর অবস্থানে পুতিন
হিজবুল্লাহ জানায়, তারা এখনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ; তবে ইসরাইলের হামলার মুখে নীরব থাকা সম্ভব নয়। বিবৃতিতে বলা হয়, “যে শত্রু আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে, আত্মরক্ষার জন্য তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া আমাদের বৈধ অধিকার।”
আইডিএফ জানায়, দক্ষিণ লেবাননের আয়তা আল-জাবাল, তায়বেহ এবং তায়ের দেব্বাতে তারা হামলা চালিয়েছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই জাওতার-আল-শারকিয়া শহরের বাসিন্দাদের সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়, এরপরই সেখানে হামলা শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরাইল সীমান্তে হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সংঘাত পূর্ণমাত্রায় রূপ নিলে ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজারের বেশি লেবানিজ নিহত এবং প্রায় ১৭ হাজার মানুষ আহত হয়েছে।
মার্কিন মধ্যস্থতায় ২০২৪ সালের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও ইসরাইল প্রায় প্রতিদিনই দক্ষিণ লেবাননে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর অন্তত ৩৫০ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। বুধবার হিজবুল্লাহর রেদওয়ান ফোর্সের এক কমান্ডারকে লক্ষ্য করেও বিমান হামলা চালায় ইসরাইল।
চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে ইসরাইলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কেবল আংশিকভাবে সেনা প্রত্যাহার হয়েছে, এবং সীমান্তের পাঁচটি চৌকিতে ইসরাইলের সেনা মোতায়েন রয়েছে।
সূত্র: আলজাজিরা, দ্য টাইমস অব ইসরাইল





