বিপিএলে স্পট ফিক্সিং তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য: ম্যাচ হারের জন্য ৪০০ কোটি টাকার প্রস্তাব

Any Akter
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশিত: ১:২২ অপরাহ্ন, ১৮ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১:২২ অপরাহ্ন, ১৮ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) স্পট ফিক্সিং তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। একটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নির্দিষ্ট ম্যাচ হারের জন্য জুয়াড়িরা ৪০০ কোটি টাকার প্রস্তাব দিয়েছিল। ফ্র্যাঞ্চাইজিটি প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছিল কি না— তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তদন্তে জানা গেছে, বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটকে এ তথ্য জানানো হয়নি এবং শেষ পর্যন্ত ফ্র্যাঞ্চাইজিটি ম্যাচটি হেরে যায়।

বিসিবির তিন সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিটি সর্বশেষ একাদশ বিপিএলের তদন্ত সম্পন্ন করেছে। আগামী সপ্তাহে প্রাথমিক রিপোর্ট বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলামের কাছে জমা দেওয়া হবে। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। অন্য সদস্যরা হলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী ড. খালেদ এইচ চৌধুরী এবং সাবেক ক্রিকেটার শাকিল কাসেম।

আরও পড়ুন: ২২ মাসের দূরত্ব মুছে, জাতীয় দলে ফিরছেন নেইমার!

তদন্তে উঠে এসেছে—শুধু গত বিপিএলেই সন্দেহজনক ঘটনা ছিল অন্তত ৩৬টি। অভিযুক্ত হিসেবে ১০–১২ জন ক্রিকেটারের নাম এসেছে, যাদের মধ্যে ৩–৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ‘হাই ফ্ল্যাগড’। এদের মধ্যে আছেন দুই সাবেক জাতীয় দলের ক্রিকেটার—একজন পেসার ও একজন অফ স্পিনার। এছাড়া সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফরের দলে থাকা একজন ক্রিকেটার, একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির কোচ ও বিসিবির একটি সাবকমিটির এক সদস্যের নামও এসেছে।

কমিটি তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি—দুর্বার রাজশাহী, সিলেট স্ট্রাইকার্স ও ঢাকা ক্যাপিটালসকে সরাসরি স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। অধিকতর তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত এসব ফ্র্যাঞ্চাইজি ও সংশ্লিষ্টদের বিসিবির সব কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখার সুপারিশ করা হবে।

আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকীতে সাকিব আল হাসানের শ্রদ্ধা

এছাড়া দেখা গেছে, একটি সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান অনলাইন বেটিং বিজ্ঞাপন প্রচার করে প্রায় ১৭০–১৮০ কোটি টাকা তুলেছে। তদন্তে আরও তথ্য পাওয়া গেছে যে, বেটিং এজেন্টরা স্টেডিয়ামের করপোরেট বক্সে বসে খেলা দেখে থাকে এবং এখান থেকেই বিদেশি এজেন্টদের নিরাপত্তা ও যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়।

প্রতিবেদনে বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটকে ঢেলে সাজানো, ঘরোয়া ক্রিকেটেও ইউনিট সক্রিয় রাখা এবং অনলাইন বেটিং প্রতিরোধে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের সুপারিশ থাকবে।

তবে ফরেনসিক তদন্তের সুযোগ না থাকায় অভিযুক্তদের ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখা যায়নি। কমিটির অভিযোগ—বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিট সহযোগিতা করেনি এবং আইসিসি কিংবা বেটিং পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর পাঠানো তথ্যও পাওয়া যায়নি।

চূড়ান্ত রিপোর্ট আগামী মাসে জমা দেওয়া হবে, যেখানে বিস্তারিতভাবে অভিযুক্তদের নাম, সন্দেহজনক ঘটনা ও প্রমাণ উপস্থাপন করা হবে।